১৬ টি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১৯৫টা আসনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলল বিজেপি। ঘোষণা হয়ে গেল পদপ্রার্থীদের নাম। এই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ২০ টি আসনের প্রার্থীর নামও। প্রথম দফায় বাংলার যে ২০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল, তার মধ্যে বেশ কিছু নতুন মুখ যেমন আছে তেমনই কিন্তু কাটা পড়েছে পুরনো নাম। বাদ পড়েছেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা। সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গাকে। সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী নিয়ে জেলার গেরুয়া শিবিরের অন্দরে চলা সমীক্ষায় ‘পিছিয়ে’ ছিলেন জন বার্লা। যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন বার্লা। তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও। কিন্তু বিজেপি সূত্রেরই খবর ছিল, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের পাঁচটি কেন্দ্রে বদল হতে পারেন দলের প্রার্থী, সম্ভাব্য সে তালিকায় থাকতে পারে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রও। এদিকে জেলার বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, নিজের লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তো দূরের কথা, গত পাঁচ বছরে বার্লা আলিপুরদুয়ারে দলের ‘ক্যাডারদের’ একটা বড় অংশের সঙ্গেই সে অর্থে যোগাযোগ রাখেননি। আর সেই কারণেই সম্ভবত বিজেপির অন্দরে একাংশ, দলের জেলা সভাপতি তথা বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গাকে টিকিট পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রাখছিলেন।
এদিকে, তালিকা অনুযায়ী, কাঁথি কেন্দ্রে প্রার্থী হলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। খড়্গপুরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে ঘাটাল কেন্দ্রের প্রার্থী করা হয়েছে। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থী দেব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ঘাটালে দেবই প্রার্থী হবেন। শ্যামাপ্রসাদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী করা হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হিসেবে তাঁর তালিকায় আলাদা কদর থাকবে। অন্যদিকে বহরমপুরে প্রার্থী হলেন শহরের বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক নির্মল সাহা। হাওড়ায় প্রার্থী করা হল রথীন চক্রবর্তীকে। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে হাওড়ার মেয়র করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পরবর্তীতে তাঁর সঙ্গে মমতার বিরোধ শুরু হয়। তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের উপস্থিতিতে রথীন বিজেপিতে যোগ দেন।
শনিবার যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতৃত্বের তরফ থেকে সেখানে দেখা যাচ্ছে কোচবিহারে প্রার্থী হচ্ছেন নিশীথ প্রামাণিক। বালুরঘাট থেকে প্রার্থী হচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। গতবারও তিনি এখান থেকেই জিতেছিলেন। মালদহ উত্তরের প্রার্থী খগেন মুর্মু। মালদহ দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। শ্রীরূপা গতবার অল্প ভোটে হেরেছিলেন। এবারও একই আসন তাঁকে দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার জিতলে মোদি মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করা হচ্ছে। হুগলিতে দাঁড়াচ্ছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। বাঁকুড়া থেকে দাঁড়াচ্ছেন সুভাষ সরকার। আসানসোলে বিজেপি প্রার্থী পবন সিং। বিষ্ণুপুর থেকে লড়বেন সৌমিত্র খাঁ। বনগাঁয় দাঁড়াচ্ছেন শান্তনু ঠাকুর। পুরুলিয়া থেকে দাঁড়াচ্ছেন জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। বোলপুরে প্রিয়া সাহা। মুর্শিদাবাদে বিজেপির হয়ে লড়বেন গৌরীশংকর ঘোষ। জয়নগরে লড়ছেন অশোক কাণ্ডারি।
একইসঙ্গে এদিন ১৬ টি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১৯৫টা আসনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলল বিজেপি। ঘোষণা হয়ে গেল পদপ্রার্থীদের নাম। তাতেই দেখা যাচ্ছে গান্ধিনগর থেকে লড়ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বারানসী থেকে লড়ছেন খোদ নরেন্দ্র মোদি, পোরবন্দর থেকে লড়ছেন মনসুখ মাণ্ডব্য। অরুণাচল ওয়েস্টে কিরণ রিজিজু, উত্তর পূর্ব দিল্লিতে মনোজ তিওয়ারি, নয়া দিল্লিতে বাঁশুরি স্বরাজ।