বিপুল সম্পত্তির মালিক সন্দীপ এবং সঙ্গীতা, জানাল ইডি

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরজি কর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডঃ সন্দীপ ঘোষের একের পর এক সম্পত্তির হিসেব সামনে চলে আসছে। ইডি-র তদন্তে তাঁর যে তালিকা পাওয়া যাচ্ছে তাতে তিনি কার্যত ধনকুবের ৷ কলকাতা মামলায় দুর্নীতির তদন্তকারী ইডি জানিয়েছে, তল্লাশির সময় সন্দীপ ঘোষের বাড়ি থেকে বহু সম্পত্তির নথি পাওয়া গেছে, যা থেকে বোঝা যায় তাঁর কয়েক কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

ইডি-র তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতার বিত্তশালী এলাকায় তাঁর একটি বা দুটি নয় তিনটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। মুর্শিদাবাদে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর নামে। শুধু তাই নয়, সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী ডক্টর সঙ্গীতা ঘোষের নামে কলকাতায় ২টি ফ্ল্যাট ও একটি  ফার্ম হাউস রয়েছে।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট মঙ্গলবার জানিয়েছে আরজি কর হাসপাতালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের স্ত্রীয়ের যে সম্পত্তি রয়েছে তাতে রাজ্য সরকারের স্বীকৃতি সহ সঠিক ডকুমেন্ট নেই।

ইডি- মঙ্গলবার জানিয়েছে প্রায় অর্ধেক ডজনেরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষের নামে। এই সম্পত্তির কয়েকটি আবার তাঁদের আত্মীয় ও পরিচিতর নামে। কলকাতারই ৭ টি লোকেশনে মিলেছে সম্পত্তি।

প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থার মতে, ডঃ সন্দীপ ঘোষ যখন আরজি কর কলেজে অধ্যক্ষ পদে ছিলেন, তাঁর স্ত্রী একই মেডিকেল কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে অভিযান চালানো হলে কোটি টাকার সম্পদের প্রমাণ মেলে। এদিকে তদন্তকারী সংস্থা একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে আনছে।  ডঃ সন্দীপ ঘোষ তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষকে ২০২১ সালে সম্পত্তি কেনার অনুমতি দিয়েছিলেন। এরপর থেকে তিনি নিজেও অনেক সম্পত্তি কিনেছেন। এদিকে আবার তল্লাশির সময়, সন্দীপ ঘোষ সম্পর্কিত আরও অনেক অপরাধমূলক নথি এবং ডিজিটাল ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার থেকে প্রাপ্ত  তথ্য-প্রমাণে স্পষ্ট বোঝা যায়, দুর্নীতির মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে এসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে। সরকারি সিলমোহর যুক্ত কাগজ ছাড়াই দুটি সম্পত্তি কিনেছেন তা তল্লাশির সময়েই সামনে আসে। রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের অনুমতি ছাড়াই ডঃ সঙ্গীতা ঘোষ দুটি সম্পত্তি কিনেছেন। এদিকে ইডি আধিকারিকরা সন্দীপ ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষের সম্পত্তি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ চান। সঙ্গীতা ঘোষ নিজে ইডি অফিসারদের কাছে এ বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, দীপের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন সংক্রান্ত সমস্ত নথি জমা দেওয়া হয় সিবিআই অফিসে। সূত্রের খবর, আগামী দিনে ইডি সঙ্গীতা ঘোষকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকতে পারে।

অনুমোদন ছাড়া লোক নিয়োগএর আগে বেলেঘাটায় সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থা সন্দীপের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ পেয়েছে। সিবিআই আরও দাবি করেছে যে ২০২২-২৩ সালে ৮৪ জন এমবিবিএস হাউস স্টাফকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল।নিয়োগ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই ওই সময়ে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই ৩টি কোম্পানিকে টেন্ডার দেন সন্দীপ ঘোষ। বিনিময়ে বিপুল কমিশন আদায় করেন। এসব অভিযোগের জেরে গ্রেফতার করা হয় সন্দীপ ঘোষকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 3 =