দুর্নীতির অভিযোগে কার্যত সাঁড়াশি চাপে রয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। হাইকোর্ট যাঁকে ‘পাওয়ারফুল লোক’ বলে সম্বোধন করেছে, সেই সন্দীপ সম্পর্কে মেডিক্যাল কলেজের এক প্রাক্তন কর্মী জানান, ‘সন্দীপ ঘোষ ছিলেন আরজি করের মুখ্যমন্ত্রী।’ নিজেকে নাকি তেমনটাই মনে করতেন তিনি।
আরজি করের মর্গে যাঁরা ক্লার্ক হিসেবে কাজ করেছেন তাঁদের একাংশের বক্তব্য, ‘কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তা চোখের সামনে দেখেছি। আর সন্দীপ ঘোষকে গুণ্ডা সর্দার বললেও ভুল হবে না। মর্গ থেকে ফার্মেসি- সব জায়গায় চলত দুর্নীতি। ভাল ডাক্তার হলেও, ওঁর পছন্দ না হলে বদলি করে দিতেন।’ এখানেই শেষ নয়, প্রাক্তন ওই কর্মীর দাবি, হাসপাতালের গেটে প্রবেশ করা থেকে শুরু করে মর্গ পর্যন্ত নিজস্ব একটা ‘সেট আপ’ তৈরি করেছিলেন সন্দীপ ঘোষ। অর্থাৎ তাঁর কথামতোই সবটা চলত বলে দাবি করেন তারক। তাঁরা এও জানান, ‘সুইপার টু সুপার- সবাইকে নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে নিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ।’ সন্দীপ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তাঁরা এও জানান, ‘শুধু কাজেকর্মে নয়, হাবেভাবেও যেন মুখ্যমন্ত্রীই ছিলেন সন্দীপ। ওঁর লোকজন বলতে শুরু করেছিল, উনি আরজি করের মুখ্যমন্ত্রী। চারস্তরীয় নিরাপত্তা পেরিয়ে যেতে হত সন্দীপ ঘোষের কাছে।” প্রাক্তন কর্মীর দাবি, শুধু পুলিশ নয়, নিজের নিরাপত্তার জন্য ব্যক্তিগত বাউন্সারও রেখেছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ। উনি যখন ঢুকতেন, তখন আগে ৩-৪ জন থাকত। তারা বলত, সরে যান সরে যান। ঠিক যেন মুখ্যমন্ত্রী ঢুকছে।’
এই সন্দীপ সম্পর্কে আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি শুধু নন, প্রাক্তন কর্মীরাও আরও নানা অভিযোগ আনেন। এর মধ্যে থানায় দায়ের হয়েছে আখতার আলির অভিযোগও।এরপরও কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে আরজি করে তরুণী চিকিৎসকে মৃত্যুর পর সন্দীপ ঘোষকে যেভাবে অন্য মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ দেওয়া হয়, তা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট।