‘অ্যানিমাল ইনস্টিংক্ট’ বা ‘হিংস্র জন্তুর মতো প্রবৃত্তি’। আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়ের সাইকোমেট্রিক টেস্টে এমনই হাড়হিম তথ্য মিলেছে বলে সূত্রের খবর। ধৃত সঞ্জয়ের দফায় দফায় মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায় যে রিপোর্ট সামনে এসেছে, তাতেই ধরা পড়েছে এমনই এক ছবি। সাইকোমেট্রিক টেস্টের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তকারী থেকে মনস্তত্ত্ববিদরা একটা বিষয়ে নিশ্চিত যে ধৃত সঞ্জয় বিকৃত যৌনতায় আক্রান্ত। চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে অপরাধ বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে হয়, ‘সেক্সুয়ালি পারভারটেড।’
আরজি করের মৃত চিকিত্সক-পড়ুয়ার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নির্যাতিতার শরীরে ২৫টিরও বেশি গভীর ক্ষতের উল্লেখ রয়েছে। যেখানে ১৬টি বাহ্যিক আঘাত আর ৯টি অভ্য়ন্তরীণ আঘাত। নির্যাতিতার মাথা, মুখ, ঠোঁট, চোখ, ঘাড়, হাত, যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষতের উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট নির্যাতিতার উপর কী ভয়াবহ ও নারকীয় নির্যাতন চালিয়েছে অভিযুক্ত বা অভিযুক্তরা। আক্ষরিক অর্থেই পশুর মতো আচরণ করেছে তারা! অভিযুক্ত এক বা একাধিক যারাই ছিল, তারাই ‘হিংস্র জন্তুর মতো প্রবৃত্তি’তে আক্রান্ত।
সিবিআই সূত্রে খবর, সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় গোটা পর্বেই সে আবেগহীন অবস্থায় ছিল। অনুশোচনার কোনও লক্ষ্মণও তার মধ্যে দেখা যায়নি। এমনকি এই ঘৃণ্য অপরাধের বর্ণনা সে নাকি নিজেই দিয়েছে। যদিও ধৃত সঞ্জয়ের এখনও পলিগ্রাফ টেস্ট হয়নি। তবে সুপ্রিম নির্দেশে দ্রুত করতে হবে পলিগ্রাফ টেস্ট। উল্লেখ্য, আগেই ‘কীর্তিমান’ সঞ্জয়ের আরও এক ভয়ংকর কীর্তির কথা সামনে এনেছেন ধৃতের দ্বিতীয় পক্ষের শাশুড়ি। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর মেয়ে যখন ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তখন সঞ্জয়ের মারধর ও শারীরিক নিগ্রহের চোটে তাঁর মেয়ের গর্ভপাত হয়ে যায়। তারপর থেকে এখনও অসুস্থ তাঁর মেয়ে।
এর পাশাপাশি ও জানা গিয়েছে, এমনকি আরও জানা গিয়েছে যে ঘটনার দিন রাতে এক মহিলাকে ভিডিয়ো কল করে তাঁকে স্ট্রিপ করতে অর্থাত্ জামাকাপাড় খুলতে বলে ধৃত সঞ্জয়। এর পাশাপাশি এটাও জানা গিয়েছে যে, ধৃত সঞ্জয় পেশেন্ট পার্টির লোকজনের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাদের ফোন করে উত্ত্যক্ত করত সঞ্জয়। কাশীপুরের এক তরুণী মাস তিনেক আগে যখন আরজি করে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন, তখন তাঁকে সাহায্য করার সুযোগে তাঁর প্রেসক্রিপশন থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে নেয় সঞ্জয়। তারপর থেকেই শুরু হয় ওই তরুণীকে উত্যক্ত করা।