সঞ্জয়ের নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা মিথ্যে, জানাচ্ছে পলিগ্রাফ টেস্ট

প্রথম থেকেই দাবি উঠছিল যে নৃশংসভাবে তিলোত্তমার ওপর নির্যাতন চলেছে, তাঁকে খুন করা হয়েছে, তা কারোর একার পক্ষে সম্ভব নয়। ধৃত একা এই ঘটনায় জড়িত নয়, দাবি উঠছিল এমনও। এমনকি আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য অনুযায়ী, ধৃতকেই দাবার বোড়ে বানানো হয়েছে। এই ঘটনা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হয় ধৃতের। তাতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ধৃতের পলিগ্রাফ টেস্টের রিপোর্ট বলছে, এর পিছনে আরও অনেকে জড়িত।  পলিগ্রাফ টেস্টের সময় একের পর মিথ্যে বয়ান দিয়েছেন ধৃত। টেস্টের পর প্রাথমিক অভিমত বিশেষজ্ঞদের। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে গিয়ে দেওয়া বয়ান ‘মিথ্যা’ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পলিগ্রাফ টেস্টে বয়ানের সময় ধৃতের মধ্যে ধরা পড়েছে ‘স্ট্রেস’। হার্ট বিট থেকে পালস রেট এর পরিবর্তন থেকেই বোঝা যায় সত্য মিথ্যা এই টেস্টে। টেস্টের সময় গ্রাফে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হয়। আর সেই গ্রাফের সূচকই বুঝিয়ে দিয়েছে মিথ্যে বলার চেষ্টা করেছে সঞ্জয়।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ধৃত একবার দাবি করছেন, সেমিনার রুমে তিনি কাউকে দেখেননি। পরক্ষণেই আবার বয়ান বদল করেছেন তিনি। আবার কখনও দাবি করেছেন, তিলোত্তমাকে মৃত অবস্থায় দেখে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। ধৃতের এই বিভ্রান্তিকর বয়ানে গ্রাফচিত্রে অস্বাভাবিক বদল আসে।

সিবিআই ধৃতকে হেফাজতে নেওয়ার পর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেখানেও একাধিকবার ভিন্ন ভিন্ন দাবি করেন ধৃত। জেরায় তিনি দাবি করেছিলেন, সেদিন সেমিনার রুমে ঢোকেননি, কখনও দাবি করেছেন তিনি উঁকি মেরে দেখেছিলেন, আবার কখনও বলেছেন, তিনি ঢুকেছিলেন, কিন্তু সেই ঘর ফাঁকা ছিল। কিন্তু পলিগ্রাফ টেস্টের সময় তিনি দাবি করেছেন, সেমিনার রুমে ঢুকেছিলেন তিলোত্তমাকে মৃত দেখেছিলেন, তাই ভয় সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছেন।

উল্লেখ্য, পলিগ্রাফ টেস্টে সেভাবে লিখিত রিপোর্ট হয় না। গ্রাফের যে ওঠানামা, সেই পরিবর্তন দেখে নির্ধারিত করা হয় অভিযুক্ত আদৌ সত্যি বলছেন নাকি মিথ্যা। ধৃতের ক্ষেত্রে হার্টবিট ও পালস রেটের সূচক যা ছিল, তা দেখে বিশেষজ্ঞরা, মনোবিদ, ফিজিশিয়নরা মনে করছেন, ধৃতের বয়ান অসত্য। পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ ও গ্রাফচিত্রের রেট দেখে তদন্তকারীরা বলছেন, ধৃত নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন, আর তার জন্যই মিথ্যা বলছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + 18 =