সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনি-ই এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আকাশ থেকে ভ্যানিশ হয়ে যেতে চলেছে বুধবার অর্থাৎ ২৪ জুলাই রাত ১টা ৩৮ মিনিটে। মহাকাশে এমন অবাক করা ম্যাজিকের ম্যাজিশিয়ান চন্দ্রদেবতা স্বয়ং। আর সেই কারণেই জুলাইয়ের ওই দিনটায় অন্তত ঘণ্টা দুই আকাশ যেন পরিষ্কার থাকে এমনটাই প্রার্থনা করে চলেছেন পেশাদার ও শখের অ্যাস্ট্রোনমাররা। ২৪ জুলাই রাতে কিছুক্ষণের জন্য মহাকাশে যে ম্যাজিক ঘটতে চলেছে, আবহাওয়া ভালো থাকলে তার পুরো মজাটা উপভোগ করতে পারবে কলকাতাও। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের হিসেব অনুযায়ী, ওই রাতেই চাঁদ কিছুক্ষণের জন্য অদৃশ্য করে ফেলবে শনিগ্রহকে।
এমপি বিড়লা তারামণ্ডলের সায়েন্টিফিক অফিসার বিপাশ দাশগুপ্ত এই প্রসঙ্গে জানান, ‘সূর্যগ্রহণের সময়ে চাঁদ যেমন পৃথিবী আর সূর্যের মাঝখানে চলে আসে, এটাও তেমন। এ বার চাঁদ চলে আসবে পৃথিবী আর শনিগ্রহের মাঝখানে। এর ফলে কিছুক্ষণের জন্য আকাশ থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে শনিগ্রহ। জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় একেই বলে অকুলেশন। চলতি কথায় একে আমরা শনির গ্রহণ বলতে পারি।’
এই প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আগামী বুধবার, ২৪ জুলাই মাঝরাতে চাঁদ প্রায় ৮০ শতাংশ আলোকিত অবস্থায় থাকবে। ওই সময়ে চাঁদ এবং শনি দু’জনেরই অবস্থান কুম্ভ রাশিতে। রাত ১টা ৩৮ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে শনির বলয় ক্রমশ চাঁদে ঢাকা পড়তে শুরু করবে। ১ ঘণ্টা ৭ মিনিট চাঁদের আড়ালে থাকার পর ফের রাত ২টো ৪৬ মিনিট ১ সেকেন্ডে শনি ফের আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করবে।
কলকাতার অ্যামেচার অ্যাস্ট্রোনমারদের সংগঠন স্কাই ওয়াচার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দীপঙ্কর দে-র বক্তব্য, ‘ঘটনাটার একমাত্র অসুবিধে হলো, সময়। অনেকটাই গভীর রাতে এটা ঘটবে। আগ্রহীদের যদি তাতে সমস্যা না-হয়, তা হলে তাঁরা খালি চোখেই সবটা দেখতে পাবেন। যাঁরা শনিগ্রহ চেনেন না, তাঁদেরও অসুবিধে হবে না। চাঁদের পাশেই যে উজ্জ্বল আলোকবিন্দু দেখা যাবে সেটাই শনি।’ এর পাশাপাশি সংগঠনের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপ থাকলে এই মহাজাগতিক দৃশ্য খুব ভালো ভাবে উপভোগ করা যাবে। এমনকী, মোবাইল ফোনের ক্যামেরা শক্তিশালী হলে ওই ক্যামেরাতেও পুরো ঘটনা রেকর্ড করা সম্ভব।