শপথবাক্য পাঠ নিয়ে বিধানসভা চত্বরে ধরনায় সায়ন্তিকা ও রেয়াত

শপথবাক্য় পাঠ নিয়ে অনড় দু’পক্ষই। একদিকে বরাহনগরের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলার তৃণমূল প্রার্থী রায়াত হোসেন সরকার চাইছেন বিধানসভায় অধ্যক্ষের কাছ থেকে শপথবাক্য় পাঠ করতে। অন্যদিকে, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস আবার শপথের জন্য বুধবার তাঁদের ডেকে পাঠান রাজভবনে। তবে দুই জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বলছেন বিধানসভাতেই তাঁরা শপথ নেবেন। এরপর এদিন বিধানসভা চত্বরে ধরনায় বসলেন সায়ন্তিকা ও রেয়াত। এদিন বিধানসভার সিঁড়িতেই প্ল্যাকার্ড হাতে বসেন দুই জয়ী প্রার্থী। সেখানে লেখা, ‘শপথবাক্য পাঠের জন্য রাজ্যপালের আসার অপেক্ষা করছি।’ তাঁদের সঙ্গে বসেছিলেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শোভনদেব জানান, ‘রাজ্যপাল ইচ্ছাকৃত এই পরিস্থিতি তৈরি করছেন। এটা বাঞ্ছনীয় নয়। সব সময় মনে রাখতে হবে মানুষের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাই মানুষকে সেবা দিতে ওরা বদ্ধ পরিকর। সেই জায়গায় রাজ্যপালের বোঝা উচিত।’

অপরদিকে, সায়ন্তিকা বলেন,’আমি নিজেই বুঝতে পারছি না আমাদের ভবিষ্যত কী। কপালের দোষ। মানুষ ভোট দিয়েছেন তাঁরা তো দোষ করেননি। তাই কপাল খারাপ কার বুঝতে পারছি না। আমরা কী ভুল করেছি বুঝতে পারছি না।’

এরপর এই গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায় বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুধবার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলন, ‘রাজভবনের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ হয়নি। রাজভবন আমাদের কিছু জানয়নি। এদিকে জয়ী প্রার্থীরা আমায় একটা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে, তাঁরা রাজভবনে একটি চিঠি দিয়েছেন এবং বিধানসভায় শপথগ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন। সেই হিসেবে হয়ত ওঁরা এসে থাকতে পারেন। আমরা বিধানসভার সচিবালয়কেও প্রস্তুত থাকতে বলেছি। যদি রাজ্যপাল আসেন, তাহলে শপথগ্রহণ হতে পারে।’

স্পিকার আরও বলেন, ‘রাজ্যপাল জেনেশুনে একটা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছেন মনে হয়। এটা ঠিক করছেন না। ওঁর বোঝা উচিত ছিল, এঁরা বিধানসভার সদস্য হচ্ছেন। বিধানসভায় শপথগ্রহণ করানোটাই উপযুক্ত হত।’ এই প্রসঙ্গে লোকসভার শপথগ্রহণের উদাহরণ নিয়ে আসেন স্পিকার। এখানেই শেষ নয়, স্পিকার আরও বলেন, ‘যদি শপথগ্রহণ না হয়, তাহলে তাঁরা বিধানসভার ভিতরে বসতে পারবেন না। কিন্তু তাঁদের যে সংসদীয় কাজ, যাঁরা ওঁদের ভোট দিয়ে পাঠিয়েছেন, তাঁদের জন্য যে কাজ করার, সব তাঁরা করতে পারবেন। সেটা আমাদের রুলেও পরিষ্কারভাবে বলা রয়েছে।’ স্পিকার স্পষ্ট জানান, এই বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে ও কার কতটা এক্তিয়ার জানার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, উপনির্বাচনে তৃণমূলের জয়ী দুই প্রার্থীর বিধায়ক হিসেবে শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতা এখনও অব্যাহত। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বরানগর ও ভগবানগোলার দুই জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেনকে রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করাতে অনড়। যদিও জোড়াফুলের দুই জয়ী প্রার্থী বুধবার রাজভবনে গিয়ে শপথ নিতে রাজি নন। এই বিষয়ে সায়ন্তিকা ও রেয়াত, উভয়েই মঙ্গলবার বিকেলে ফের চিঠি দিয়ে রাজ্যপাল বোসকে বিধানসভায় এসে শপথবাক্য পাঠ করানোর আবেদন জানান। চিঠিতে তাঁরা লেখেন, ‘আপনি বিধানসভায় আসুন, বিধানসভায় আপনার কাছে শপথগ্রহণ করব।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − two =