গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন ওডিশার উত্তর দিকে তৈরি ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে ফের একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে বাংলার দক্ষিণভাগে, এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। এই নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর ও দক্ষিণ, দুই বঙ্গেই সোম ও মঙ্গলবারে দফায় দফায় বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। রবিবার দুপুরে আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে আটটায় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের আকাশে নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গের উপর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার উপরে যে ঘূর্ণাবর্তটি অবস্থান করছে, সেটি দক্ষিণ–পশ্চিম দিকে কিছুটা হেলে রয়েছে। এরপর ওই ঘূর্ণাবর্ত আগামী তিন দিনের মধ্যে ধীর গতিতে আরও কিছুটা পশ্চিম দিকে সরে প্রথমে ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিসগড়ের দিকে এগিয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
একটি নিম্নচাপ ও তার খুব কাছাকাছির মধ্যে একটি ঘূর্ণাবর্ত ছাড়াও দেশের পশ্চিম প্রান্ত থেকে একটি মৌসুমি অক্ষরেখাও বাংলার দিকে ক্রমশ বিস্তৃত হয়ে ওয়েদার সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে বলেই জানিয়েছে আলিপুর। এই অক্ষরেখাটি সুরতগড়, সিরসা, দিল্লি, লখনৌ, বেনারস, ডালটনগঞ্জ, বাঁকুড়া এবং দিঘা হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরে এসে মিশেছে। দক্ষিণবঙ্গের উপর তৈরি ঘূর্ণাবর্ত, নিম্নচাপ এবং পশ্চিম ভারতের মৌসুমি অক্ষরেখাটিও ওই দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়েই অগ্রসর হওয়ায় গোটা দক্ষিণবঙ্গই ঘন মেঘের আস্তরণে ঢাকা পড়েছে—এমনটাই দেখা যাচ্ছে উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিতে। এর প্রভাবে শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গেও সোমবার ও মঙ্গলবার বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার দক্ষিণবঙ্গের ১৫টি জেলার প্রায় সবগুলোতেই বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছেন আবহবিদরা। পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির (৭–১১ সেন্টিমিটার) সতর্কতা থাকছে। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং তার সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও খুব বেশি। মঙ্গলবার বিকেল থেকে দক্ষিণবঙ্গের পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে। এ দিন ভারী বৃষ্টির সতর্কতা না থাকলেও সব জেলাতেই বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের হিমালয় সংলগ্ন জেলারগুলোয় অর্থাৎ দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে সোমবার ও মঙ্গলবার। বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কিছুটা কমবে বলেই জানা গিয়েছে।