৪৬ বছর পর গত রবিবার অর্থাৎ ১৯ জুলাই, খোলা হয়েছিল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার। তারপর থেকেই জনমানসে অসীম কৌতূহল তৈরি হয় এই রত্ন ভাণ্ডারে কী রয়েছে তা নিয়ে। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, এই রত্ন ভাণ্ডার পাহারা দেয় সাপ। কিন্তু, রত্নভাণ্ডার খোলার পর, একটিও সাপ পাওয়া যায়নি। পাওয়া গিয়েছে সোনার গয়না, মুকুট, জগন্নাথের হাত-পায়ের মতো সম্পদ। তবে, যে পরিমাণ বহুমূল্য সম্পত্তি থাকবে বলে আশা করা হয়েছিল ততটাও পাওয়া যায়নি। অনেকেই মনে করেছিলেন, একটি রুপোর সিংহাসন থাকতে পারে, কিন্তু, তা পাওয়া যায়নি। বাইরের কক্ষটি ৪৬ বছর আগে একবার খোলা হয়েছিল। ভিতরের কক্ষটি তারও আগে থেকে বন্ধ ছিল। এবার দুটিই খোলা হয়েছে। এদিকে ভক্তদের দাবি, ভিতরের কক্ষের সঙ্গে যুক্ত এক গোপন সুড়ঙ্গ আছে। এবার সেই সুড়ঙ্গের খোঁজ করবে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া।
এর জন্য রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরের কক্ষটিতে লেজার স্ক্যান করতে চলেছে এএসআই। পুরো রত্ন ভাণ্ডারটির সংস্কার করবে এএসআই। তার জন্য, বৃহস্পতিবারই রত্ন ভাণ্ডারের বাইরের ও ভিতরের কক্ষে থাকা সমস্ত সম্পদ একটি অস্থায়ী স্ট্রংরুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কক্ষগুলি পুরোপুরি খালি করার পরই সেখানে সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। পুরীর রাজ পরিবারের সদস্য তথা জগন্নাথ মন্দিরের পরিচালন পর্ষদের চেয়ারম্যান দিব্যসিংহ দেব জানিয়েছেন, রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরের কক্ষে গোপন সুড়ঙ্গ থাকা নিয়ে জল্পনা দূর করতে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি দিয়ে লেজার স্ক্যানিং করা হবে। তার আগে, মন্দির কর্তৃপক্ষ রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরের ও বাইরের কক্ষ পরীক্ষা করবে। তারপর, এই দুই কক্ষেরই দখল নেবে এএসআই।
এদিকে বেশ কয়েকজন সেবাইতও দাবি করছেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরের কক্ষে একটি গোপন সুড়ঙ্গ আছে। সেখানেই নাকি জগন্নাথ মন্দিরের আসল ধন-সম্পদ লুকোনো আছে। সুপারভাইজারি প্যানেলের চেয়ারম্যান, বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ জানিয়েছেন, এই ধরনের কোনও সূড়ঙ্গের ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই। তিনি আরও জানিয়েছেন, রত্ন ভাণ্ডার থেকে অস্থায়ী স্ট্রংরুমে ধন-সম্পদ নিয়ে যেতে সাড়ে সাত ঘণ্টা সময় লেগেছে। তিনি এও জানান, ‘আমরা কখনই সুড়ঙ্গ তত্ত্ব বিশ্বাস করিনি। এই নিয়ে কোনও ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই। আমরা সব ধন-সম্পদ সরিয়ে ভিতরের কক্ষের দেওয়ালগুলি পরীক্ষা করে দেখেছি। কোথাও কোনও সুড়ঙ্গ পাইনি।’