আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের। রবিবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতার ট্রেনি চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার এই মামলার শুনানি হবে আগানী মঙ্গলবার, ২০ অগস্ট। দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে শুনানি হবে আরজি কর মামলার। কারণ, আগামী সোমবার আদালত বন্ধ।ফলে  মঙ্গলবার আদালতের শুরুতেই এই মামলা শোনার সম্ভাবনা রয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চের।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে এই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি করেন। উজ্জ্বল গৌঢ় এবং রোহিত পাণ্ডের লেখা চিঠিতে বলা হয়,  ‘কলকাতায় হয়ে যাওয়া ঘটনাটি খুবই সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রধান বিচারপতির উচিত বিষয়টিতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ নেওয়া। গোটা দেশ আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সরব। তাঁরা ন্যায় চাইছেন। দেশের বিচারব্যবস্থার অভিভাবক আপনি। তাই চিকিৎসকের উপর ঘটে যাওয়া এই নির্মম ও নৃশংস ঘটনায় আপনার হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।’ ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে হাসপাতালে তাণ্ডবের কথাও। দাবি করা হয়, প্রমাণ লোপাট করতেই পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। এদিন দুপুর ১টা ৩ মিনিটে নথিভুক্ত হয়েছে মামলা।

গত ৮ অগাস্ট, নাইট শিফট ছিল তরুণী চিকিৎসকের। পরদিন সকালে সেমিনার হল থেকে দেহ উদ্ধার হয় তাঁর। ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে বলেই অভিযোগ। এই ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের সিট সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে। ১২ অগাস্ট এই ঘটনার জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। মোট চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীরা সকলেই পুলিশের উপর আস্থা না রেখে তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার আর্জি জানান। পরদিন মামলার শুনানিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। আপাতত ধৃত সঞ্জয়কে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এছাড়া দফায় দফায় আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ-সহ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। তদন্তভার নেওয়ার চারদিন পরেও যদিও সিবিআই এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করেনি।

এদিকে, সময় যত গড়াচ্ছে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনের ঝাঁজও যেন ততই বাড়ছে। একটানা কর্মবিরতিতে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। ‘অপরাধীর ফাঁসি চাই।’ এই দাবি উঠছে সর্বত্র। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ন্যায়বিচার এবং অপরাধীর ফাঁসির দাবিতে মিছিল করেছেন। বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। যত দ্রুত সম্ভব এই অপরাধের কিনারা করে অপরাধীর ফাঁসির দাবি তুলেছেন তিনিও। রাজ্যের অধিকাংশ হাসপাতালে বহির্বিভাগে ব্যাহত চিকিৎসা পরিষেবা। শুধু তাই নয় দিল্লিতেও আছড়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঢেউ। শনিবার আইএমএ-র ডাকে দেশজুড়ে কর্মবিরতিতে অংশ নেন চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মীরা। পাকিস্তান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনও তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছে।
এদিকে, গত বুধবার আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় একদল দুষ্কৃতী। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − seven =