শরণার্থী ইস্যুতে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যে আপত্তি জানাল তৃণমূল। সূত্রে খবর, এই ইস্য়ুতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছে তীব্র অসন্তোষ জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদেরা। তৃণমূলের তরফে সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বিদেশমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বিরোধী দলনেতার মন্তব্য সংযত হওয়া উচিত। সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের ওপর নজর রাখারও আবেদন জানানো হয়েছে। এই নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজনাথ সিং নিজেদের মধ্যে কথা বলেন। তাঁরা এ বিষয়ে সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন ও সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আশ্বস্ত করেছেন বলে খবর।
এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করারও আবেদন জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে। কারণ, যেহেতু পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া সীমান্ত এই বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশের এমন এক পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের উপরে সবথেকে বেশি চাপ আসছে। সেই কারণে মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠক চলাকালীন বিরোধী দলনেতার ভূমিকা নিয়ে বিদেশমন্ত্রীর কাছে তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়। জানা যাচ্ছে, আলাদা ভাবেও এস জয়শঙ্করকে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, যেভাবে বিরোধী দলনেতা শরণার্থী নিয়ে প্রকাশ্যেই মন্তব্য করছেন তা অত্যন্ত প্ররোচনামূলক। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কোনওভাবেই এই ধরনের মন্তব্য সঙ্গত নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে যাতে তাঁকে সংযত থাকার নির্দেশিকা দেওয়া হয়, সে দাবিও তোলা হয়।
সূত্রের খবর, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেই যাতে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ করে। বাংলাদেশে যে ধরনের ঘটনা ঘটছে, তার সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ছে কিংবা পড়তে চলেছে বাংলাতেই।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে যখন টালমাটাল পরিস্থিতি, তখন বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছিলেন, ‘এক কোটি শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গে আসবে। আপনারা তৈরি থাকুন। আমি তো তৈরি আছি। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে বলব, কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলুন।’ কাকতালীয়ভাবে তাঁর মন্তব্যের খানিক পরেই বাংলাদেশের সরকারের পতন হয়। শেখ হাসিনা ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন। তারপরই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তগুলিতে হাই অ্যালার্ট জারি করে বিএসএফ। সঙ্গে শুরু হয় সীমান্তগুলিতে কড়া নজরদারিও। এসবের মধ্যেই শুভেন্দু হঠাৎ করেই মঙ্গলবার দিল্লি উড়ে গিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলতেই দিল্লিতে গিয়েছেন। কিন্তু কী নিয়ে কথা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আর তা নিয়েই রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে।