দল থেকে আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল শাহজাহানকে। এবার অপসারণ করা হল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকেও। ঘরের সামনে থেকে খুলে ফেলা হল নামের ফলক। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ স্থায়ী সমিতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহজাহানকে। উত্তর ২৪পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী জানান, তাঁর কুকর্মের জন্য দল যখন তাঁকে বহিষ্কার করেছে, সেক্ষেত্রে জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হল। সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী আরও জানান, স্বাভাবিকভাবেই অনেকদিন ধরে জেলা পরিষদের তার দফতরের যে সমস্ত কাজ রয়েছে, সেই পরিষেবা মানুষ পাচ্ছিল না। সে কারণেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং গোটা প্রক্রিয়াটাই জেলা পরিষদের আইন অনুসারেই করা হয়েছে বলেও জানান তিনি ।
যদিও বিরোধীরা এ নিয়ে কটাক্ষ করেছে শাসক দলকে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানান, জেলা পরিষদের পথ থেকে সরাতে গেলে যে আইন অবলম্বনের প্রয়োজন সেই প্রক্রিয়ায় সরানো হয়েছে বলে মনে হয় না। সঙ্গে এও জানান, অস্বস্তি কাটাতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শাহজাহানকে। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা তাপস মিত্র বলেন, ‘ভোট বৈতরণী পার ও নিজেদের স্বচ্ছ প্রকাশ করতেই লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্যাকফুটে থাকা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস শেখ শহাজাহানকে পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই মিনাখাঁ থেকে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ গ্রেফতার করে শাহজাহানকে। গত ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাটের নানা অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ অর্থাৎ সিআইডি।
এদিকে সন্দেশখালি এলাকায় একাধিক জায়গায় জমি দখল, জমির পাট্টা না দেওয়া, অবৈধ ভেড়ি নির্মাণ সহ একাধিক অভিযোগ জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গোটা ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সমগ্র সন্দেশখালি। এলাকাবাসীর একাংশ বারবার দাবি জানাতে থাকে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করার জন্য। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে অবশেষে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।