ষড়যন্ত্রের তত্ত্বে অনড় শঙ্কর, এদিকে ইডির স্ক্যানারে আঢ্য় পরিবার

গ্রেফতারি পর্বের শুরু থেকে শঙ্কর ও তাঁর পরিবারের লোকেরা দাবি করে আসছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। বুধবারেও এই দাবিতেও অনড় থাকতে দেখা গেল শঙ্করকে। বুধবার বিকেলে যখন তাঁকে শিয়ালদহ বি আর সিং হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখনও তিনি দাবি করেন, ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। এদিকে রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কতটা ঘনিষ্ঠতা ছিল, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। যদিও সেই ঘনিষ্ঠতার তত্ত্ব মানতে নারাজ শঙ্কর। এই প্রসঙ্গে তিনি সাফাই গাইতে গিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যদি এতটাই ভাল সম্পর্ক হত, তাহলে জ্যোতিপ্রিয় তাঁকে সরালেন কেন তা নিয়েই।  গ্রেফতারি পর্বের শুরু থেকে শঙ্কর ও তাঁর পরিবারের লোকেরা দাবি করে আসছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘আমার কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। সেটা তদন্তকারীরা দেখবেন।” কিন্তু কেন তিনি বলছেন ষড়যন্ত্রের কথা? শঙ্করের যুক্তি, “আমার কোনও চাল কল নেই। আমি কোনও ডিলার নই।’

এদিকে ইডি সূত্রে খবর, রেশন দুর্নীতির তদন্তে স্ক্যানারে শঙ্কর আঢ্যর পরিবার। এবার ধৃত তৃণমূল নেতার পরিবারের সদস্যদের তলব ইডির। ‘নিজের মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ভাইয়ের নামে বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থা খুলেছিলেন শঙ্কর আঢ্য। রেশন দুর্নীতির তদন্তে ৯৫টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার হদিশ মিলেছে। ৬টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থা শঙ্কর ও তাঁর পরিবারের নামে, বাকি সংস্থা ছিল ভুয়ো নামে’, আদালতে জমা দেওয়া তালিকায় দাবি ইডির।

ইতিমধ্যেই রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ধৃত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকেআদালতে পেশ করে বিস্ফোরক দাবি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এক-দু কোটি বা পাঁচশো-হাজার নয়, রেশনে দুর্নীতির অঙ্কটা ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা! এমন কি দুর্নীতির এই অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইডি। এরই পাশাপাশি  ইডির তরফ থেকে এও দাবি করা হচ্ছে, ধান-চাল-গম কেনাবেচা নয়, রেশন দুর্নীতির কালো টাকা কোন পথে, কীভাবে ঘুরিয়ে সাদা করা হবে, সেই পরিকল্পনায় শঙ্কর আঢ্যর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কলকাতার মার্কুইস স্ট্রিটে শঙ্কর আঢ্যর কারেন্সি লেনদেনের সংস্থা, আঢ্য ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস। ফুল ফ্লেজ মানি চেঞ্জার হিসেবে কাজ করে এই কোম্পানি। একইসঙ্গে এও জানানো হয়, রেশন দুর্নীতির কালো টাকা দিয়ে তৃণমূল নেতার এই কোম্পানির মাধ্যমে ঘুরিয়ে কেনা হয়েছে সোনা, বিদেশি মুদ্রা। হাওয়ালার মাধ্যমে বাইরে টাকা পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + 4 =