এজবাস্টনে শুরু হয়েছে ভারত–ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। ম্যাচের প্রথম দিনেই সেঞ্চুরি হাতছাড়া ভারতের তরুণ ওপেনার যশস্বী জয়সোয়ালের। ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল কিন্তু সেঞ্চুরি করলেন। প্রথম টেস্টের পরে দ্বিতীয় টেস্টেও ভারত অধিনায়কের ব্যাট থেকে এল সেঞ্চুরি। প্রথম দিনের শেষে ভারতের রান ৫ উইকেটে ৩১০। প্রতম দিনের শেষে অপরাজিত রয়েছেন গিল (১১৪) এবং জাদেজা (৪১)।
এদিন ভারতীয় দলে তিনটি পরিবর্তন করে। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে জশপ্রীত বুমরাকে। এই ম্যাচেও জায়গা পাননি কুলদীপ যাদব। টিম ম্যানেজমেন্টের এই সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি হতে পারেননি ক্রিকেটপ্রেমীরা। সুনীল গাভাসকর থেকে রবি শাস্ত্রী, সকলেই প্রশ্ন তুলেছেন এমন দল সাজানো নিয়ে। তবে এরই মধ্যে দুরন্ত ইনিংস খেলে নজর কাড়লেন যশস্বী। এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে হাতছাড়া হল সেঞ্চুরি।
তবে এদিন চর্চায় যশস্বীর সঙ্গে ইংল্যান্ডের ক্যাপ্টেন বেন স্টোকসের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা। ম্যাচের ১৭তম ওভারে বল করছিলেন বেন স্টোকস। তাঁর বলে আগেই দু’টি বাউন্ডারি মারেন যশস্বী। এরপর একটি বলে সিঙ্গলস নিচ্ছিলেন ভারতের এই বাঁহাতি ওপেনার। তখনই যশস্বীর সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান স্টোকস। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেই ভিডিয়ো। সেখানে দেখা গিয়েছে রান নেওয়ার সময় যশস্বীকে কিছু বলেন স্টোকস। অন্য প্রান্তে পৌঁছে যশস্বীকে বলতে শোনা যায়, ‘আশা করি, তুমি আমার মুখ থেকে এমন কিছু শুনতে পছন্দ করবে না।’স্টাম্প মাইকে ধরা পড়ে এই কথোপকথন। তবে প্রত্যুত্তরে স্টোকস কী বলেছেন সেটা শোনা যায়নি। ক্রিকেটপ্রেমীরা মনে করছেন জয়সোয়ালের ফোকাস নড়ানোর জন্যই এমন করেছিলেন স্টোকস।
এদিন ইনিংস ওপেন করতে নেমে মাত্র ২ রানে ফেরেন কেএল রাহুল। এরপরে করুণ নায়ারের সঙ্গে ৮০ রানের জুটি গড়েন যশস্বী। যশস্বী ও করুণ নায়ারের জন্য চাপ অনুভব করেনি ভারত। করুণ নায়ার ভালই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু কার্সের হঠাৎই লাফিয়ে ওঠা বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন করুণ (৩১)। এর পরে যশস্বী ও গিল ভারতীয় ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান। তবে সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান আগেই থেমে যান ভারতের বাঁ হাতি ওপেনার। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে না পৌঁছলেও যশস্বী গড়েন নতুন রেকর্ড।
১৯৭৪ সালে এজবাস্টনে মাইক ডেনেসের ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৬৫ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সুধীর নায়েক। এত দিন পর্যন্ত এজবাস্টনে কোনও ভারতীয় ওপেনারের এটাই ছিল সর্বোচ্চ রান। এদিন সুধীর নায়েকের রেকর্ড ভেঙে দিলেন যশস্বী। তিনি উঠে এলেন এক নম্বরে। সুধীর নেমে গেলেন দুই নম্বরে। এরপর পন্থ (২৫) মারতে গিয়ে ধরা পড়লেন ক্রলির হাতে। যশস্বী জয়সওয়াল ও ঋষভ পন্থ ফিরে যাওয়ার পরে গিল ও রবীন্দ্র জাদেজা ভারতের ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন। দলের ভাঙন রোধ করেন তাঁরা দু‘জনে। পন্থ আউট হওয়ার পর এজবাস্টন জুড়ে কেবল শুভমান গিল। রুটকে চার মেরে এদিন সেঞ্চুরি করেন গিল। তার পরে সেলিব্রেশনে মেতে ওঠেন ভারত অধিনায়ক। এটা শুভমানের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চতুর্থ। অধিনায়ক হিসেবে এটা তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। শুভমান গিলের ১১৪ রানের ইনিংসে রয়েছে ১২টি বাউন্ডারি। মহম্মদ আজহারউদ্দিনের পরে দ্বিতীয় ভারত অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ডের মাটিতে পরপর দুটো সেঞ্চুরি করলেন গিল। শুভমান ও জাদেজা জোড়েন ৯৯ রান। এজবাস্টন টেস্টের দ্বিতীয় দিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা কী করেন সেটাই দেখার।