ভুয়ো নথি দেখিয়ে ভারতীয় সেনায় রয়েছেন বহিরাগতরা, দাবি সিবিআইয়ের

সেনাবাহিনীতে পাক চরের উপস্থিতি থাকতে পারে বলে যে মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় এবার নয়া মোড়।  ভুয়ো নথি নিয়ে অনেকেই চাকরি করছেন সেনাবাহিনীতে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করা রিপোর্টে এমনই জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। বিদেশি নাগরিকের উপস্থিতির প্রমাণ এখনও না মিললেও সেই আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা সংস্থা। এই মামলায় তদন্তে ইন্টারপোলের সাহায্য প্রয়োজন হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে। বিষ্ণু চৌধুরী নামে জনৈক ব্যক্তি যে মামলা করেছিলেন,  বুধবার এফআইআর করে তারই তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।

বিষ্ণু চৌধুরী নামে মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন পাক নাগরিক। ব্যারাকপুর সেনা ছাউনিতেও এমন কেউ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সেই মামলায় সিবিআই প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর এই রিপোর্ট পেশ করেছে আদালতে। রিপোর্টে অভিযোগ, ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট, ভুয়ো ডোমিসাইল সার্টিফিকেট দিচ্ছেন কয়েকজন মহকুমা শাসক। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই ভুয়ো ডোমিসাইল সার্টিফিকেট নিয়ে চারজন আধা সামরিক বাহিনীতে কাজ করছেন। তবে, সেনাবাহিনীতে এমন কারও কাজ করার প্রমাণ এখনও পায়নি সিবিআই।

এমনকী সিবিআই রিপোর্টে এও দাবি করা হয় যে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে, এমনকী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই অভিযোগের গুরুত্ব রয়েছে। জাল নথি দিয়ে উত্তর পূর্ব ভারত সহ অন্য রাজ্য থেকে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। সিবিআইয়ের তরফে এও জানানো হয়েছে যে, সার্টিফিকেটে এসডিও-র সই থাকলেও তিনি তা স্বীকার করছেন না। ভুয়ো ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়ার নজির আছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি রিপোর্ট এও বলছে, উত্তর ২৪ পরগনায় এমন কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। শুধু এই রাজ্য নয়, প্রতিবেশী রাজ্যের সীমান্ত এলাকাতেও রয়েছে এই সমস্যা। সিবিআই উল্লেখ করেছে, ভিন দেশের নাগরিকের এমন চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইন্টারপোলের সাহায্য দরকার হতে পরে। এটা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় থ্রেট। বেশ কিছু সরকারি অফিসার এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সিবিআই।

রিপোর্ট দেখে বুধবারই বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দেন, দ্রুত এফআইআর করে এখনই তদন্ত শুরু করতে হবে। যতদিন না সিবিআই এই তদন্তের রিপোর্ট দিচ্ছে, ততদিন মামলাকারী বিষ্ণু চৌধুরীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয় পুলিশকে। কারণ, মামলাকারী জানিয়েছেন, এই অভিযোগ সামনে আনার পর বেশ কয়েকবার তাঁকে খুনের চেষ্টাও হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − nine =