বর্জ্য পৃথকীকরণের জন্য এবার কলকাতা ও বিধাননগরে বিশেষ মেশিন বসাতে চলেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। পরে রাজ্যের আরও দুই শহরে তা বসানো হবে বলেও খবর মিলছে। একইসঙ্গে ও জানানো হয়েছে, এই যন্ত্রে সব ধরনের বর্জ্যই প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আলাদা করা যাবে। পচনশীল ও অপচনশীল, দু’ধরনের বর্জ্যের সাহায্যেই তৈরি হবে আরডিএফ।
এই প্রসঙ্গে বলতে হয়, আরডিএফ হল কয়লার মতো কালো এক ধরনের বস্তু। যা থেকে জ্বালানি এবং সিমেন্ট তৈরি করা যায়। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কলকাতা ও বিধাননগরে এই যন্ত্র বসানো হলেও ধাপে ধাপে অন্যত্রও তা বসবে। এই প্রসঙ্গে পরিবেশ দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘রাজ্যে নতুন করে আর কোনও ডাম্পিং গ্রাউন্ড চাইছি না আমরা। তাই বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
এদিকে ইতিমধ্যেই বর্জ্য পৃথকীকরণের জন্য কলকাতা ও বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় বছর খানেক আগেই নীল ও সবুজ রঙের বালতি বিলি করা হয়েছে। একটি পচনশীল, অন্যটি অপচনশীল বর্জ্যের জন্য। কিন্তু বাসিন্দাদের একাংশের দু’ধরনের বর্জ্য মিলিয়ে দেওয়ার কারণে পৃথকীকরণে সমস্যা হচ্ছে।
পাশাপাশি পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে বছরে প্রায় ৩ লক্ষ ১৩ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টন বর্জ্য পৃথকীকরণ হয়। বাকিটা করা যায় না। অথচ পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, উৎসেই বর্জ্য পৃথকীকরণ না হলে তা ফের ব্যবহার করা সম্ভব নয়। সে কারণেই বিশেষ যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুরের ‘সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ থেকে এই যন্ত্র বসানোর ধারণা মিলেছে। মেশিনটির সাহায্যে মিশ্রিত বর্জ্যের মধ্যে প্লাস্টিক থাকলেও তা আলাদা করা সম্ভব হবে। তা ছাড়া, যন্ত্রের সাহায্যে তা গুঁড়ো করাও যাবে। যা দিয়ে তৈরি হবে ওই আরডিএফ। এটি বিক্রি করে অর্থও আসবে। সেই সঙ্গে কমবে বর্জ্যের পরিমাণ, কমবে দূষণ।