বামেদের সঙ্গে বিজেপিকে একছাতার তলায় আসার বার্তা সৃজনের

বঙ্গ থেকে উৎখাত করতে হবে তৃণমূলকে, বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদে বসার পরই সায়েন্স সিটি 
অডিটোরিয়াম থেকে এমনই বার্তা দিতে দেখা গেছে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস এবং বাম কর্মীদেরও। আর এরই রেশ টেনে শমীক 
ভট্টাচার্য এও জানান, তৃণমূলকে উৎখাত করতে হলে সবার আগে দরকার বাম-কংগ্রেসকে পতাকা ফেলে 
একযোগে আন্দোলনে আসার। বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতির এই বার্তাই দুদিন আগেই দিতে শোনা 
গিয়েছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এমনকী বৃস্পতিবার শমীককে হিন্দুদের পাশাপাশি
 সংখ্যালঘু মুসলিমকেও একজোট হওয়ার বার্তা দিতেও শোনা যায়। বাম-কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বললেন, 
আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরানো যাক। তারপর না হয় আপনারা আপনাদের রাজনীতি বিরোধী পরিসরে 
করবেন। শুধু তাই নয়, মঞ্চ থেকে একেবারে হিসাব কষে বুঝিয়ে দেন কীভাবে সামান্য অঙ্কের হেরফেরেই বঙ্গের
রাজনীতি থেকে সমূলে উৎপাটন করা যাবে শাসকদল তৃণমূলকে।  

শমীকের এই বার্তা নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। কারণ, যেখানে  কট্টর হিন্দুত্বের লাইনে হাঁটছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, ঠিক তারই সঙ্গে কীভাবে শমীক বার্তা দিলেন মুসলিমদের এক ছাতার তলায় আসার তা নিয়েই। সঙ্গে এ জল্পনাও শুরু হয়েছে নয়া এই চালে বামপন্থীদের অস্বস্তি বাড়ালেন কি না তা নিয়েও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা,  ঘুরপথে বাম ভোট, লিবারেল ভোটে থাবা বসাতে চলেছে বিজেপি

আর এই প্রসঙ্গেই বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতিকে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি সিপিএম নেতা সৃজন ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য,  শমীকবাবু যা বলেছেন তাতে তো মনে হচ্ছে উনি বিজেপি কর্মীদের চিন্তাই অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ, উনি বলছেন একইসঙ্গে মহরমের তাজিয়া আর দু্র্গাপুজোর মিছিল একসঙ্গে বের হবে। এমন বাংলা নাকি ওনারা দেখতে চান। এটা তো জ্যোতিবাবু, বুদ্ধবাবুর সময় হত। আর এখানেই সৃজনের দাবি, শমীক ভট্টাচার্যররা আসলে ঘুরপথে বামফ্রন্ট সরকারকে ফেরানোর আবেদন করছেন। এরই প্রেক্ষিতে সৃজন বলেন ‘বিজেপির রাজ্য সভাপতি আসলে বামফ্রন্ট সরকার ফেরানোর আবেদন করছেন। এটা দেখে আমাদের খুব ভাল লেগেছে। যে সমস্ত মানুষ মনে করছেন তৃণমূলকে তাড়াতে চাই তাঁরা এতদিনে বুঝে গিয়েছেন বিজেপিকে দিয়ে আর হবে না। ওরা শুধু জিতব, জিতব করে জিততে পারে না।এরপরই বিজেপির উদ্দেশ্যে সৃজনের বার্তা, ‘শমীকবাবু সহ বিজেপির সমস্ত নেতাকর্মীসমর্থকদেক বলছি দলের পতাকা সরিয়ে রাখুন। ছাব্বিশে তৃণমূলকে হারাতে যেভাবে সাহায্য করতে হয় সেটা করুন।

তবে এখানেও তৈরি হয়েছেএক প্রশ্নচিহ্ন। বিজেপি কর্মীরা যদি সত্যিই সিপিএমের দিকে ঝোঁকেন তাহলে দিনের শেষে বামনেতারাই হজম করতে পারবেন কি না তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। কারণ, ২০১৬ সালের পর থেকে ভোট পরিসংখ্যান বলছে আঠারোর পঞ্চায়েত বা তার পরবর্তী সময়ে বাম ভোট রামে গেছে। আর তাতে বঙ্গ রাজনীতিতে অঙ্কের দিক থেকে ‘শূন্য’-তে দাঁড়িয়ে বামেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + eleven =