হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে এসএসসি, কল্যাণ জানালেন বড় ক্ষতি

এসএসসি বিজ্ঞপ্তি  সংক্রান্ত ডিভিশন বেঞ্চের মামলায় আদালতের প্রশ্নের মুখে এসএসসি কর্তৃপক্ষ। এসএসসির নতুন বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা হয়।

এসএসসির পক্ষে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়ালে বলেন, চিহ্নিত ও চিহ্নিত নয় এই নিয়ে দ্বন্দ্ব। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনামায় গোটা নিয়োগটাই বাতিল করছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকলেরই চাকরি বজায় আছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগের নির্দেশ। ২০১৬র পুরো প্রক্রিয়ায় বাতিল। তাহলে ওই বছর যারা অকৃতকার্য হয়েছিল তারই ওই সিলেকশন প্রসেসে আবেদন করতে পারবে না। তার কারণ ওই অকৃতকার্য চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে যোগ্য, অযোগ্য বাছাই সম্ভব না এদিকে

হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকায় কোথাও বলা নেই চিহ্নিত অযোগ্যরা পরীক্ষা দিতে পারবে না। কিন্তু মূলত তিনটে বিভাগে চিহ্নিত অযোগ্যদের টাকা ফেরতের কথা বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট, প্রথমত প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যাঁরা চাকরি পেয়েছেন। দ্বিতীয়ত, যাঁরা ব্ল্যাঙ্ক ওএমআর শিট জমা দিয়েছিলেন এবং তৃতীয়ত, যাঁরা প্যানলের পিছন থেকে চাকরি পেয়েছেন বা প্যানেলের বাইরে থেকে চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট বলেছিল যাঁরা ব্ল্যাঙ্ক ওএমআর জমা দিয়েছেন, শুধু তাঁরাই টাকা ফেরত দেবেন।

এরই প্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি সৌমেন সেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেন, ‘যোগ্য আর অযোগ্যদের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে সেটা সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করেছে, এটা আপনি এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন?’ একইসঙ্গে এও জানায়,  যখন একটা বড় ইস্যু উঠে আসে। সেটা বাতিল হয় তখন সার্ভিস কত বছর সেটা নাও গ্রহণীয় হতে পারে। এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৬০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে কতজন চিহ্নিত অযোগ্য আবেদন করেছেন এদিন তাও জানতে চায় আদালত।  উত্তরে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায়, ‘মোট চিহ্নিত অযোগ্য হল ১,৮০১।এরপরই কমিশনকে প্রশ্ন বিচারপতি সৌমেন সেনের প্রশ্ন, ‘বেআইনি হোক বা অনিয়ম করে হোক এই চিহ্নিত অযোগ্যরা চাকরি পেয়েছেন। করেছেন। ফলে এদের অভিজ্ঞতা কীভাবে কেড়ে নেওয়া যায় ? এটাই আপনাদের বক্তব্য?’  উত্তরে কমিশন জানায়, ‘হ্যাঁ। চিহ্নিত অযোগ্যদের নিয়োগে অংশ নিতে না দেওয়া হলে তাঁদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।একইসঙ্গে কল্যাণ এও জানান, যাঁরা চিহ্নিত অযোগ্য তাঁদের চাকরি গেল টাকাও ফেরত দেওয়া হল তাঁকে আবার বলা হচ্ছে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আর এখানেই আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, এক অপরাধের জন্য দুটো সাজা হয়ে গেল না কি না তা নিয়েই। সঙ্গে তিনি এও জানান, এতে সংবিধানের ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদেকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি সেন বলেন, ‘আপনারা কমিশন। আপনারা দেখবেন আপনার দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষায় কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’ এরই পাশাপাশি বিচারপতি সেন এ প্রশ্নও তোলেন,  আপনারা অযোগ্যদের হয়ে কথা বলছেন সেটা আদৌ এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে কি না সেটাও দেখার বিষয়।’ এরই রেশ ধরে বিচারপতি সেন এও জানান, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া যা আপনাদের দ্বারা হয়ছে তাতে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একবার। আর সুপ্রিম কোর্ট কোথায় বলেছে যে অযোগ্যদের পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে? আমায় জাস্টিফাই করুন কেন আমি আপনার এই যুক্তি গ্রহণ করব?’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =