স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তি ঘিরে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। এর মধ্যে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে বয়সে ছাড় নিয়েও। সোমবার এই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার মামলার শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রয়েছে।
২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হওয়ার পর ২০২৫ সালে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। আর সেই বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কিছু নতুন নিয়ম সংযোজিত হয়েছে। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে ১০ নম্বর অতিরিক্ত দেওয়া হবে। ২০১৬–র প্যানেলে ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের দাবি, এ ক্ষেত্রে তারা ওই নম্বর পাবেন না, ফলে শুরু থেকেই পিছিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এখানেই মামলাকারীদের প্রশ্ন, ২০২৫–এ নতুন রুল তৈরি করা হল কেন তা নিয়ে।
সোমবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, ২০১৬–র রুল বলে এখন আর কিছু নেই। ২০১৯–এর রুল রয়েছে। পাশাপাশি এজি এও স্পষ্ট ভাবে জানান, নতুন রুল জারি করা যাবে না, এ কথা বলেনি শীর্ষ আদালত। রাজ্যের তরফ থেকে একইসঙ্গে এও জানানো হয়, সরকার শূন্যপদের হিসেব রাখতে থাকে, শেষ পর্যন্ত যখন নিয়োগের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন সব শূন্যপদ একসঙ্গে করে ঘোষণা করা হয়। আর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাজ্যের আছে।
এদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের বক্তব্য, ২০১৬ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত নানা আইনি জটিলতায় অনেক যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেনি, ফলে তাদেরকেও সেই সুযোগ দিতে হবে বলে দাবি করেন এসএসসি–র আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিশনের স্পষ্ট দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই নিয়োগ হলেও ২০১৬ সালের রুল সংশোধন না করলে সেটা সম্ভব নয়। তাই নতুন করে রুল তৈরি করা হয়েছে।
এদিনের শুনানিতে কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘যারা ২০১৬ সালের ওয়েটিং লিস্টে ছিল, তারা এত বছরেও চাকরিতে ঢুকতে পারেনি, তাদের ডাক আসেনি। তাহলে কোন যুক্তিতে ধরব যে তারা যোগ্য প্রার্থী? কোনও কোর্টের কোনও নির্দেশে ২০১৬ সালের রুল ধরে নিয়োগ করতে হবে বলেনি। অন্য কোনও স্কুল থেকে বা বেসরকারি স্কুল থেকে কেউ এসএসসি তে আবেদন করলে, তিনি পূর্ব অভিজ্ঞতা নিয়েই আসছেন, তাই তিনি ওই অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর পাওয়ার উপযোগী। কমিশনের অধিকার আছে বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে নিয়োগ করার।’ এই প্রসঙ্গে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নতুনদের জায়গা দিতে হবে তো।
অন্যদিকে রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কমিশনের কাছে বর্তমানে তিনটি বিধি আছে। ২০১৬ সালের বিধি, ২০১৯ সালের বিধি এবং ২০২৫ সালের বিধি। রাজ্যের বক্তব্য, যে সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হোক না কেন, সেটা পড়ুয়াদের ভালর কথা চিন্তা করেই করা হয়েছে। ফলে, কমিশন যদি পড়ুয়াদের ভালর জন্য ২০২৫ সালের বিধিকে উপযুক্ত বলে মনে করে, তাহলে কোনও চাকরিপ্রার্থী সেটাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন না।এদিকে মামলাাকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, আসলে আযোগ্যদের ফের সুযোগ করে দিতে নতুন করে রুল তৈরি করে পড়ানোর পূর্ব অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর করে পাইয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।