কলকাতা হাইকোর্টেও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর শারীরিক অবস্থা প্রশ্নের মুখে। এর আগে বারবার ইডি প্রশ্ন তুলেছে, কালীঘাটের কাকু কতটা অসুস্থ সেটাই তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। অথচ তারা কোনওভাবেই কাকুর কণ্ঠের নমুনা নিতে সফল হচ্ছে না। শুক্রবার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের জামিন মামলায় আরও একবার সে প্রশ্নই উঠল। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। এদিন আদালতে ইডির তরফ থেকে জানানো হয়, সুজয়কৃষ্ণর অসুস্থতাকে বানানো গল্প বলেই মনে করছেন তাঁরা। এদিকে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক অবস্থা জানিয়ে এবং কেন তাঁকে জামিন দেওয়া যাবে না, সেই বিষয়ে রিপোর্টও জমা দেবে ইডি।
এদিন আদালতে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান, ‘দু’টো তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় আছে। একটি চ্যানেল একটা স্টিং অপারেশন করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র সোফায় বসে আছেন, পা নাড়াচ্ছেন, হাসছেন। ৮ নভেম্বর এই খবর প্রকাশ হয়েছে। সেই ফুটেজ চেয়ে পাঠানোর নির্দেশ দিক আদালত।’ এদিকে সুজয়কৃষ্ণর তরফের আইনজীবী কিশোর দত্ত আর্জি জানান, বাইপাস সার্জারি হওয়ার পর তাঁকে যেদিন জেলে পাঠানো হল, তাঁর বমি শুরু হয়। মেডিকেল গ্রাউন্ডে তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। এদিন ইডির তরফে বলা হয়, ‘আদালতের নির্দেশের পরও এখনও পর্যন্ত ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট করতে পারিনি। যেদিন ভয়েস স্যাম্পেল নেওয়ার ছিল, আগের দিন রাতে কাকুকে শিফট করে দেওয়া হলো আইসিইউয়ে। অসুস্থতা বানানো গল্প। উনি সুস্থ আছেন।’ এদিকে আদালত সূত্রে খবর, আগামী মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি।
তবে এটা স্পষ্ট যে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর অসুস্থতাই কার্যত স্পষ্ট হচ্ছে না ইডির কাছে। এরইমধ্যে আবার হৃদযন্ত্রের মাংসপেশীর সক্ষমতা যাচাইয়ে ‘স্ট্রেস মায়োকার্ডিয়াল পারফিউশন স্ক্যান’ টেস্টের পরামর্শ দিয়েছেন এসএসকেএমের চিকিৎসকরা। এসএসকেএমের বক্তব্য, এই পরীক্ষা সরকারি হাসপাতালের কোথাও না হওয়ায় বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে করতে হবে বলে প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে এসএসকেএম। এদিকে সূত্রে খবর মিলছে, এসএসকেএমে এই যন্ত্র রয়েছে এবং এসএসকেএমেই রয়েছে। তবে মিলছে না এই যন্ত্র চালানোর কোনও টেকনোলজিস্টের। সেই কারণেই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পড়ে রয়েছে তা।
এসএসকেএম সূত্রে খবর, ২০১০ সালে বাম আমলে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগে পারফিউশন স্ক্যানের যন্ত্রের উদ্বোধন হয়। ২০১৩ সালে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের অভাবে সে পরিষেবা বন্ধ হয়। অভিযোগ, ১০ বছরে একাধিক আবেদনেও মেলেনি সাড়া। সূত্রের দাবি, স্বাস্থ্য ভবনে এ সংক্রান্ত মঞ্জুরি ফাইল পড়ে আছে।