বুধবার ভবানীভবনে রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে বৈঠকের পর এবার মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজভবনে পৌঁছলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দেখা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে। সূত্রের খবর, ঘরছাড়াদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন চেয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। দিয়েছেন পাশে থাকার আশ্বাস। প্রয়োজনে মুর্শিদাবাদ যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
ওয়াকফ অশান্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা পড়েছে। বুধবার রাজ্য পুলিশের ডিজিপির সঙ্গে কথা বলতে ঘরছাড়াদের নিয়ে ভবানীভবন গেছিলেন সুকান্ত। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ডিসি সাউথের সঙ্গে কথা বলেন। পরে রাজীব কুমারের সঙ্গেও দেখা হয়। কথা বলে খুব একটা সন্তুষ্ট নন বলেই জানিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। এদিন সুকান্ত সঙ্গে রাজভবনে আসেন তাপস রায় ও রূপা গাঙ্গুলি। রাজ্যপাল ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলেন গোটা ঘটনা নিয়ে। অভিজ্ঞতার কথা শোনেন এবং সেই মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান। বার বারই বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার জন্য এক অন্য লড়াই চলছে তাঁদের।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ওয়াকফ নিয়ে অশান্তি বাধে মুর্শিদাবাদে। মৃত্যু হয় তিনজনের। পুলিশের দাবি, পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু অনেকেই ভয়ে ধুলিয়ান-সুতি থেকে পালিয়ে যান। তাঁরা প্রত্যেকেই অভিযোগ করেছিলেন, অত্যাচার করে ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গেলেও দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় এলাকা। এবার ওই ঘরছাড়াদের নিয়েই বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ বিজেপি নেতা তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
এরপর এদিন দুপুরে রাজ্যপালের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের সাক্ষাৎ করিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সুকান্ত। পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ প্রশাসনকে। তাঁর প্রশ্ন,’পুলিশের গোয়েন্দাবিভাগ বলে তো একটা বিভাগ ছিল। তারা কী করছিল? সবই তো শুনলাম ওরা জানত, বলেছে তিন মাস ধরে মুর্শিদাবাদে অশান্তির ছক কষা হয়েছে। তুরস্ক থেকে নাকি টাকা এসেছে। তা যদি এতদিন ধরে ছক করা হয়েই থাকে, তাহলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকা গোয়েন্দা বিভাগ কী করছিল? ওয়েব সিরিজ বানাচ্ছিল? নাকি বসে বসে ফ্যাক্ট চেক করছিল? ওদের তো এখন কাজই হচ্ছে ফ্যাক্ট চেক করা।’ মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের পাশে দাঁড় করিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি মনে করিয়ে দেন, ‘এঁরা মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা রেখেছিলেন। কিন্তু তার পর কী হল? পুলিশের সামনেই ঘর লুট হল, নির্যাতনের শিকার হলেন। এর দায় কার তাহলে?’