প্রশ্নফাঁসের জেরে নিট-ইউজি বাতিল হবে কি না তা নিয়ে একটা জল্পনা চলছে। তবে এ নিয়ে সোমবার কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেল না সুপ্রিম কোর্টকে। তবে এদিন প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় কেন্দ্র এবং এনটিএ-র কাছে বিস্তারিত তথ্য় তলব করল শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়ায় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের প্রশ্নবাণ। প্রধান বিচারপতির এদিনের পর্যবেক্ষণ, ‘প্রশ্নফাঁস হয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এর ব্যপ্তি কতটা তা জানতে হবে। সঙ্গে জানতে হবে কতজন পরীক্ষার্থী এর সুবিধা পেয়েছে।’ শুধু তাই নয়, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তাও এদিন জানতে চান প্রধান বিচারপতি। একইসঙ্গে কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘আগে থেকেই বলবেন না যে কিছু হয়নি।’
আদালত সূত্রে খবর, পরীক্ষার আয়োজক ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির কাছে পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মূলত তিনটি বিষয় তাদের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত। প্রথমত, কীভাবে প্রশ্নফাঁস হল তা নিয়ে। দ্বিতীয়ত, কোন এলাকায় প্রশ্নফাঁস হয়েছে সে ব্যাপারেও জানতে চায় আদালত। তৃতীয়ত, প্রশ্নফাঁস ও পরীক্ষার মাঝের সময়ের ব্যবধান কত? বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে কেন্দ্র, এনটিএ ও হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। পরবর্তী শুনানি ১১ জুলাই। এদিন আদালতে কেন্দ্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে প্রশ্নফাঁসের তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। ৬টি এফআইআর হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হলফনামা জমা করতে হবে।
এদিনের শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি যখন জানতে চান, কোথায় প্রশ্নপত্র তৈরি হয়েছিল উত্তরে এনটিএ জানায়, দিল্লিতে প্রশ্নপত্র তৈরি হয়েছিল। গত ৫ মে অর্থাৎ পরীক্ষার দিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে ১১টার মধ্যে প্রশ্নপত্র খোলা হয়েছিল। আবেদনকারীদের আইনজীবীর দাবি, টেলিগ্রাম অ্য়াপ মারফত প্রশ্নফাঁস হয়েছিল। প্রধান বিচারপতির আশঙ্কা, সত্যিই যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে বড় আকারে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছে।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, অর্থাৎ সর্বভারতীয় অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেন এই পরীক্ষার জন্য। অথচ সেই পরীক্ষাতেই বিরাট কেলেঙ্কারি অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্নফাঁস হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। এদিন সেই সমস্ত আবেদনের শুনানি ছিল। প্রশ্নফাঁস মেনে নিয়েও শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র জানিয়েছিল, খুব ব্যাপক আকারে প্রশ্নফাঁস হয়নি। এদিন কেন্দ্রের সেই দাবিকে কার্যত উড়িয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।