বহরমপুর কলেজ ছাত্রী খুনের মামলায় প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর ফাঁসির নির্দেশ দিল আদালত। বৃহস্পতিবার বহরমপুর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক ওই নির্দেশ দেন। এরপরই এদিন সুশান্ত চৌধুরী ক্ষমা চেয়ে নেয় বিচারকের কাছে। ২০২২ সালের মে মাসে সুতপা চৌধুরী নামে ওই কলেজ ছাত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। ছুরি দিয়ে ৪২ বার কোপানো হয়েছিল সুতপাকে। সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল সুশান্ত। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে চলছিল এই মামলার শুনানি। সেই মামলারই রায় ঘোষণা হয় বৃহস্পতিবার।
উল্লেখ্য, গত বছর ২ মে সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে শহিদ সূর্য সেন রোড দিয়ে নিজের মেসে ফিরছিলেন সুতপা। মেসে ঢোকার মুখেই তাঁকে পাকড়াও করে ছুরি করে সমানে কোপাতে থাকে প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত। ছুরির আঘাতে সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় সুতপার। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরেও কোপানো থামে না। দু একজন পথচারী বাধা দিতে এগিয়ে গেলে সুশান্ত বন্দুক হাতে ভয় দেখায়। এ সব কিছুই ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরাতে। এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণেই এই নৃশংস খুনের ঘটনা। এদিকে যে বন্দুক দিয়ে ভয় দেখিয়েছিল সুশান্ত তা আদতে ছিল একটি খেলনা বন্দুক। এদিকে সিসি ক্যামেরার সূত্রধরেই ঘটনার পর দিন গ্রেফতার করা হয় সুশান্তকে। ঘটনার ৭৫ দিনের মাথায় বহরমপুর আদালতে ৩৮৩ পাতার চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।ওই চার্জশিটে অভিযুক্ত সুশান্তের বিরুদ্ধে খুন সহ একাধিক ধারা দেওয়া হয়।
এদিকে সুতপার পরিবারের অভিযোগ, ২০১৭ সাল থেকেই একাধিক বার তাঁদের মেয়ের উপর নানাভাবে চাপ দেয় সুশান্ত। সুতপার বাড়িতেও অনেকবার গিয়েছে সুশান্ত। পুলিশি তদন্তে নেমে আরও জানতে পারে, রাগ ও হতাশা থেকেই সে এই কাণ্ড ঘটায়। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুতপা সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই প্রতিহিংসা থেকে সুশান্ত প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে। এর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ঘটনার কিছুদিন আগে থেকেই সুতপার গতিবিধি নজরে রাখছিল সুশান্ত। এর জন্য সুতপার মেসের কাছেই একটি মেসে ভাড়া থাকত সে। ওই ঘটনা ঘটিয়ে সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ সুশান্ত মেসে ফিরে আসে। পরে পালানোর চেষ্টা করে। তার জন্য গাড়ি ভাড়াও করেছিল। ওই গাড়িতে পালাতে গিয়েই মাঝপথে ধরা পরে সে।