সন্দেশখালি যাওয়ার পথে জায়গায় জায়গায় শুভেন্দুর পথ আটায় পুলিশ। গাড়িতে উঠে চলে তল্লাশিও। সব টপকে বেলা সওয়া দুটো নাগাদ সন্দেশখালি পৌঁছন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে তিন বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, তাপসী মণ্ডল, শঙ্কর ঘোষ। কিন্তু সরবেড়িয়া পৌঁছতেই পুলিশ কর্তার সঙ্গে ব্যাপক তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু। মিনাখাঁ-র এসডিপিও-র সঙ্গে তিনি বচসায় জড়িয়ে পড়েন। শুভেন্দুর বাসের চাকা সেখানেই স্তব্ধ হয়। বাস থেকে নেমে পড়তে বাধ্য হন শুভেন্দু। সেখানেই বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, পুলিশ বুট দিয়ে তাঁকে মেরেছেন। তাঁর পা চিপে দিয়েছেন। রাস্তায় বসে পড়েন শুভেন্দু। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
একইসঙ্গে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘সন্দেশখালি আমি যাবই! আইনি সহায়তা নিয়ে যাব!’ তিনি এদিন এও জানান, ‘আদালত ১৪৪ ধারা তুলে দেওয়ার পর আজ আমরা নিয়ম মেনে ৪ জন বিধায়ক যাচ্ছিলাম। এরপরেও আটকানো হল। পুলিশ যে আটকেছে, সেটার প্রমাণ রাখছি।’ এই প্রসঙ্গেই পুরো বিষয়টি নিয়ে তিনি ফের আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান।
এদিকে সূত্রে খবর, এদিন সন্দেশখালি যাওযার পথে প্রথমেই সায়েন্স সিটির কাছে বাস আটকায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ বাস আটকায়। গাড়ির ভিতর ঢুকে, পরিস্থিতি দেখে বাস থেকে নেমে যায় পুলিশ। বাস আবার সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর বাসন্তী হাইওয়েতে শুভেন্দু অধিকারীর বাস আটকায় পুলিশ। পুলিশ একেবারে শুভেন্দুর বাসের ভিতর ঢুকে যায়। বাস থেকে বেরিয়ে আসেন শুভেন্দু। তিনি প্রশ্ন করেন, “দায়িত্বে কোন অফিসার রয়েছেন?” পুলিশের তরফ থেকে উত্তর আসে ‘অফিসার-ইন-চার্জ রয়েছেন’। শুভেন্দু তখন জানান, তাঁর লেভেল ওসি লেভেল নয়। আইপিএস-কে ডাকা হোক। সঙ্গে স্পষ্টতই জানান, শুভেন্দু কোনও আইপিএস-এর সঙ্গেই কথা বলবেন।এরপরই পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি পুলিশ কর্তাদের। গাড়ির ভিতর ঢুকে, পরিস্থিতি দেখে বাস থেকে নেমে যায় পুলিশ। বাস আবার সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেয়।
এরপর সব বাধা কাটিয়ে সরবেড়িয়া পর্যন্ত পৌঁছয় শুভেন্দুর বাস। সেখানে পুলিশের কড়া প্রহরা। পুলিশ বাস আটকায়। সরবেড়িয়াতেই বাস থেকে নেমে রাস্তায় বসে পড়েন শুভেন্দু। ব্যাপক তর্কাতর্কি হয় পুলিশ কর্তার। এদিকে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, শুভেন্দু চার জনকে নিয়ে যেতেই পারেন। একাও যেতে পারেন। কিন্তু শুভেন্দু গেলে সেখানে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। উত্তরে শুভেন্দু জানতে চান, ‘গ্রামবাসীরা থাকবে তো বাইরে লোক কোথায়? এর আগে তো রাজ্যপাল গিয়েছেন, জাতীয় মহিলা কমিশন গিয়েছে, আজ এসসি কমিশন গিয়েছে, তাহলে পরিস্থিতি খারাপ হয়নি? আমরা গেলেই হবে?’ এরপরই পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, ‘ওরা গিয়েছে পরিস্থিতি খারাপ হয়নি।’ এরই প্রত্যুত্তরে শুভেন্দু জানতে চান তাঁকে আটকানো হচ্ছে কেন। সঙ্গে এও মনে করিয়ে দেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামে হারিয়েছেন। উত্তরে এসডিপিও মিনাখাঁ আমিনুল ইসলাম জানান, সেটা তাঁদের দেখার বিষয় নয়। শান্তির কথা মাথায় রেখে তিনি যেতে দিতে পারবেন না। কারণ শুভেন্দু ওখানে গেলে গ্যাদারিং হতে পারে। আমি আমার দফতরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসরণ করছি। এটাই আমাদের নিয়ম। এরপরই শুভেন্দু চিৎকার করতে বলেন, এটা যা করা হচ্ছে তা গায়ের জোরে করা হচ্ছে। এরপরই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দেন বিরোধী দলনেতা। সঙ্গে শুভেন্দু জানান, ‘আমি এখানে ধরনা দেব। পুলিশ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে ভালো, না হলে আমি আইনি লড়াইয়ে যাব।’