বুধবার সকাল থেকে তপ্ত হয়ে উঠল বিধানসভা অধিবেশন। বিরোধীদের লাগাতার বিক্ষোভ, স্লোগান পাল্টা স্লোগান। তার মধ্যেই বুধবার নিজের শারীরিক নির্যাতনের ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিধানসভা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্বয়ং। অধিবেশনের প্রথম পর্বের কাজ শেষ হওয়ার পর নারী নির্যাতন ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি নিয়ে বিধানসভার গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। তখনই সাংবাদিকদের সামনে শুভেন্দু অধিকারী বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘বিধানসভার লবিতে আমি যখন বেরোচ্ছিলাম, তখন পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় আমাকে ফিজিক্যালি অ্যাসল্ট করতে চায়। বিজেপি এমএলএ-রা কেন্দ্রীয় বাহিনী পায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বাইরে রাখার অর্ডার রয়েছে।’ একইসঙ্গে এও জানান, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষী ইস্যুতে তিনি আমি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছেন। এবার লিখে পাঠাবেন।
বুধবার বিধানসভা অধিবেশনের শুরু থেকেই নারী নির্যাতন ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি পাল্টা বলেন, ‘নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সবার আগে বাংলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়। ক্রিমিন্যাল জাস্টিস কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে রাজ্যের হাত থেকে।’ আর এই ইস্যুতে তপ্ত হয়ে ওঠে অধিবেশন। বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে থাকেন। পাল্টা স্লোগান দেন শাসক বিধায়করাও।
এরপর প্রথম পর্বের অধিবেশন শেষে বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন বিজেপি বিধায়করা। অভিযোগ, তখনই পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে শারীরিক হেনস্থা করেন। এরই প্রেক্ষিতে শুভেন্দু প্রশ্ন করেন, ‘তপন চট্টোপাধ্যায়ের সাহস হয় কীভাবে? নীলাদ্রী দানা, বিশাল লামা-সহ একাধিক বিধায়ক সাক্ষী, সাংবাদিকরা সবাই সাক্ষী। তপন চট্টোপাধ্যায় দু’বার, একবার হাউজের ভিতরে করেছেন, আজকে লবিতে করলেন। আমাকে ফিজিক্যালি টর্চার করার জন্য এগিয়েছেন।’ এরই রেশ ধরে শুভেন্দু এও বলেন, ‘গেটের ভিতরে যদি আমার কোনও বিধায়কের শারীরিকভাবে ক্ষতি হয়, তার দায় বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাড়ে যাবে।’
এদিকে এই ঘটনায় বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘শুভেন্দু অধিকারী ভোটের আগে আমার বাড়ির পাঁচশো মিটারের মধ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলে এসেছেন, আমার মেয়ে নাকি থার্ড ডিভিশনে পাস করেছে। আমার নাকি অবৈধ উপায়ে দুটো ফ্ল্যাট কেনা। আমার মেয়ে ফার্স্ট ডিভিশনে পাস করেছে, গ্র্যাজুয়েশন করেছে, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট, বিএড করেছে, তাঁর নামে যদি এমন কথা বলেন, কী বলব! আমার সম্মানহানি করেন।’ সঙ্গে এও বলেন, অনেক লোক ছিল, শারীরিক হেনস্থা করা হয়েছে কি না তা জি়জ্ঞাসা করা হোক।