শর্তসাপেক্ষে রাজভবন যেতে পারবেন শুভেন্দু, জানাল আদালত

শর্তসাপেক্ষে রাজভবনে যেতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার এমনটাই জানালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। একইসঙ্গে এদিন বিচারপতি সিনহা কার্যত পুলিশকে তুলোধোনা করেন। সঙ্গে এও নির্দেশ দেন, রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য নতুন করে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে আবেদন জানাতে হবে শুভেন্দুকে।

শুক্রবার এই মামলায় বিচারপতি জানান, রাজ্যপাল অনুমতি সাপেক্ষে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন শুভেন্দু অধিকারী ও নির্বাচন পরবর্তী অশান্তিতে ‘আক্রান্ত’ ব্যক্তিরা। তবে রাজ্যপালের সঙ্গে কতজন দেখা করতে যাবেন, সেটা পুলিশকে আগে জানাতে হবে। পাশাপাশি বিচারপতি অমৃতা সিনহার আরও নির্দেশ, যদি গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে কতগুলি গাড়ি রাজভবনের ভিতরে ঢুকবে, সেটাও জানাতে হবে পুলিশকে।

তবে শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষের আইনজীবী এদিন আদালতে জানিয়ে দেন, তাঁদের কোনও গাড়ি রাজভবনের ভিতরে ঢুকবে না। সকলেই হেঁটে রাজভবনের ভিতরে প্রবেশ করবেন। অন্যদিকে রাজ্যের তরফে আবার সওয়াল করা হয়, যাঁরা রাজভবনের ভিতরে প্রবেশ করবেন, তাঁদের শনাক্তকরণের কাজ শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষ থেকে কোনও ব্যক্তিকে করতে হবে। রাজ্যের এই দাবিতে বিচারপতি সম্মতি দিলেও, তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কারও পরিচয় নথিবদ্ধ করা যাবে না। কারণ, সেরকম হলে পরে আবার তাঁদের হেনস্থা করার আশঙ্কা থেকে যায় বলেই মনে করছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর মামলার শুনানির সময় বিচারপতি অমৃতা সিনহার কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। বিচারপতি এদিন রাজ্যের কাছে জানতে চান, রাজ্যপালকে কি গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে তা নিয়েই। যদি সেটা না হয় তাহলে কেন তাঁর অনুমতিক্রমে কাউকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। যদিও সেক্ষেত্রে রাজ্যের যুক্তি, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে ৪০মিনিট নাগাদ একটি কালো গাড়ি রাজভবনের সামনে এসে থেমেছিল। সেই সময় শুভেন্দু অধিকারীর আপ্তসহায়ক সেখানে দায়িত্বে থাকা ডিসির সঙ্গে দেখা করেন।

রাজ্যের যুক্তি, ডিসি তখন জানতে চেয়েছিলেন কতজন ব্যক্তি ও কতগুলি গাড়ি ভিতরে যাবে। কিন্তু এরপর তিনি রাজভবনের ভিতরে চলে যান এবং পুলিশের সঙ্গে আর কথা বলেননি বলেই দাবি রাজ্যের।

এদিকে ভোটের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগে সরব শুভেন্দু, সুকান্তরা। তাঁদের জন্য কলকাতার একটি ধর্মশালা ‘মাহেশ্বরী ভবন’ ভাড়া করা হয়েছিল, আশ্রয় দেওয়ার জন্য। সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখাও করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু সেই মাহেশ্বরী ভবন থেকেও নাকি তাঁদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এর পরই শুভেন্দু অধিকারী সেসব ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজভবন যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালকে এই সংক্রান্ত বিষয় জানিয়ে ইমেল পাঠান। তাঁর দাবি, রাজ্যপালের সচিবের তরফে জানানো হয়, ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজভবনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল, রাজ্যপাল সকলের সঙ্গে দেখা করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =