সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে যে রায় দিয়েছে তাতে এক মুহূর্তে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। এরপর চাকরিহারারা সাংবাদিক বৈঠক করে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘আমরা পয়লা বৈশাখ অবধি সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ডাক না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটব।’
এমনই এক পরিস্থিতিতে বাংলার মেয়ে স্বপ্না বর্মন যোগ্য প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ালেন। দিলেন বার্তাও। শুধু তাই নয়, তাঁদের লড়াই করার জন্য উদ্বুদ্ধও করেন। আর স্বপ্নাই একমাত্র ক্রীড়াবিদ, যিনি এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে মুখ খুললেন।
এই প্রসঙ্গে ফেসবুকে একটি রিলও শেয়ার করেন জাকার্তা এশিয়ান গেমসে (২০১৮) হেপ্টাথেলনে সোনাজয়ী স্বপ্না। যেখানে তাঁর যোগ্যদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা, সঠিক সময়ে তাঁরা মুখ না খোলায় এই দিন দেখতে হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘সমাজটা আজ কোন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে? সমাজটা আজ কোন জায়গায় চলে গিয়েছে? আজ কলকাতার বুকে বা পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও জায়গায় গেলে দেখতে পাবেন, কত শিক্ষার্থী কাঁদছে। যাঁরা যোগ্য প্রার্থী তাঁরা কাঁদছেন। যাঁরা অযোগ্য, তাঁদের কথা তো ছেড়েই দিলাম। ওঁরা তো অযোগ্য।’
সেখানেই স্বপ্না থেমে যাননি। আরও বলেন, ‘সমাজ কেন খারাপ হয় জানেন? যাঁরা যোগ্য তাঁদের জন্য সমাজটা খারাপ হয়। কেন? কারণ তাঁরা যখন কথা বলার দরকার, তাঁদের যখন চিৎকার করা দরকার, আন্দোলন করা দরকার, তখন তাঁরা চুপ করে থাকেন। তার জন্যই কিন্তু আজ এমন দিন দেখতে হচ্ছে। এক বছর আগে বোধহয় এই প্যানেল নিয়ে কথা হয়েছিল। যে এই প্যানেলে ৮ হাজার শিক্ষার্থী অযোগ্য, তাঁদের বরখাস্ত করা উচিত। তখন আপনারা যাঁরা যোগ্য ছিলেন, চুপ করে ছিলেন কেন? তখন আন্দোলন করলে তো আজকে এমন দিন দেখতে হত না।’
যাই হোক না কেন, যোগ্য প্রার্থীদের হাল না ছাড়ার বার্তাও দিয়েছেন স্বপ্না। যেমনটা তিনি ট্র্যাকে নামলে ছাড়েন না। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যাঁরা যোগ্য প্রার্থী, তাঁদের জন্য় আমার খুব খারাপ লাগছে। কাঁদতে হচ্ছে ওঁদের। আজ এমন দিন দেখতে হচ্ছে। একজন সাংবাদিক আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, আমি যে স্কুলে পড়তাম, সেখানকার ৫ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। আমার সত্যিই খুব খারাপ লাগছে এই সব শুনে। প্লিজ যাঁরা যোগ্য, তাঁরা চুপ করে থাকবেন না। এমন কোনও খারাপ সিদ্ধান্তও নেবেন না। নিজের জন্য লড়ুন।’