যন্ত্রের সাহায্যে যন্ত্রণাহীন আত্মহত্যার পথ দেখাচ্ছে সুইৎজারল্যান্ড

যন্ত্রের সাহায্যে যন্ত্রণাহীন আত্মহত্যা। আধুনিক প্রযুক্তির বিস্ময়কর এই যন্ত্র এবার বাস্তবে প্রয়োগ হতে চলেছে। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে যন্ত্রণাহীন আত্মহত্যা করা যাবে সার্কো ডেথ ক্যাপসুলের সাহায্যে। প্রথমবারের জন্য সেটি ব্যবহৃত হতে চলেছে বিশ্বে।

মানসিক অবসাদ থেকে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় উপর্যুপরি বৃদ্ধি পাচ্ছে দুনিয়া জুড়ে। অধিকাংশ দেশেই নিষ্কৃতি মৃত্যুর উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভারতে আত্মহত্যা করাও অপরাধ। কিন্তু, এই বিশ্বেই রয়েছে এমন এক দেশ যেখানে ইচ্ছায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া যায়। সুইৎজারল্যান্ডে আত্মহত্যায় সহায়তা করা হয়। তবে রয়েছে বড়সড় শর্ত। কোনও কঠিন এবং মারণ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেই একমাত্র আত্মহত্যায় সহায়তা করা যাবে, সুস্থকে নয়।

এই যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর জন্য এই দেশে তৈরি করা হয়েছে ডেথ ক্যাপসুল। সুইস সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, প্রথমবার সে দেশে এই ডেথ ক্যাপসুলের ব্যবহার করা হবে। এক্সিট সুইৎজারল্যান্ড নামে একটি সংস্থা সার্কো ডেথ ক্যাপসুল তৈরি করেছে। এই মেশিনে বসার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। ড: ফিলিপ নিশকের মস্কিষ্কপ্রসূত এই ডেথ ক্যাপসুল। তিনি বলেন, ‘যারা যন্ত্রণাহীন মৃত্যু চাইছেন, এই মেশিন তাঁদের সহায়তা করবে।’ সূত্রে খবর, চলতি মাসেই এই ডেথ ক্যাপসুলের ব্যবহার হতে চলেছে। যারা নিষ্কৃতি মৃত্যুর দাবি জানিয়েছেন তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হবে। এক্সিট সুইৎজারল্যান্ডের ওয়েবসাইটে ডেথ ক্যাপসুলের ছবির নিচে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘খুব শীঘ্রই আসছে।’

এই সার্কো পড ক্যাপসুল আদতে একটি ডেথ কফিন। এই মেশিনটি থ্রি-ডি টেকনোলজিতে তৈরি। ডেথ কফিনটির মধ্যে প্রবেশ করে শুয়ে পড়তে হবে একজন ব্যক্তিকে। এরপর মেশিনের ভিতরেই কিছু প্রশ্ন অটোমেটিক ভয়েসে করা হবে সেই ব্যক্তিকে। প্রশ্নের উত্তরগুলি দেওয়ার পর মেশিনটিকে সুইচ টিপে অ্যাক্টিভেট করে দিতে পারবেন তিনি। সুইচ টেপার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপসুলটির ভিতরে নাইট্রোজেনে ভরে যাবে। অক্সিজেনের মাত্রা নিজে থেকেই কমে যাবে। প্রথমটায় একটু অস্বস্তিবোধ করলেও তারপর জ্ঞান হারাবেন ভিতরে শুয়ে থাকা ব্যক্তি। হাইপোক্সিয়া এবং হাইপোক্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হবেন তিনি। কোনও আতঙ্ক, দম বন্ধ করা পরিস্থিতি গ্রাস করবে না তাকে। এমনকী চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কোনও অনুভূতিই হবে না ওই ব্যক্তির। ধীরে ধীরে নিজের কাজ শুরু করবে ক্যাপসুলটি। ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে, চোখের পলক পড়তে না পড়তেই যন্ত্রণাহীন মৃত্যু মিলবে। এখনও পর্যন্ত দু’টি এরকম ক্যাপসুল তৈরি করা হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে।

সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, ক্যাপসুলটির ভেতরে একটি ক্যামেরা রাখারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে মৃত্যুর ঠিক আগের মুহূর্তে একজন ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পরিজনরা জানতে পারেন। মেশিনের মধ্যে সোডিয়াম পেন্টোবার্বিটাল কেমিক্যাল ভরার জন্য চিকিৎসদের সাহায্যের দরকার। এই ড্রাগের সাহায্যেই একজন ব্যক্তি ধীরে ধীরে কোমায় চলে যান। যার পরবর্তী অবস্থা মৃত্যু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 3 =