ওজন কমাতে চাইলে নিয়মিত সুজি খেতে পারেন, এমনটাই জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।কারণ, সুজির মধ্যে রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্যকর উপকারিতা, যা আপনার শরীরে ম্যাজিকের মত কাজ করবে। সুজির মধ্যে থাকা প্রোটিন ও ডায়টেরি ফাইবার আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে ও শক্তিশালী করতে তুলতে সাহায্য করে। সুজির মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক, থিয়ামিন, রাইবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি৬ এবং ফোলেট। এছাড়াও সুজি হচ্ছে কার্বোহাইড্রেট যুক্ত একটি খাবার যা শরীরের ক্ষেত্রে ভীষণ সহায়ক। পুষ্টির সমাহার থাকায় এই খাদ্যকে সুষম আহার বললেও ভুল হবে না। এই ধরণের খাদ্য মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্র এবং কিডনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে শক্তির জোগান দেয়। ডায়টেরি ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন কমাতে সাহায্য করে সুজি। এই ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য অনেকটা সময় ধরে পেট ভর্তি রাখে, যার ফলে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা হ্রাস পায় আর সহজেই ওজন কমে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই খাদ্য শরীরে শক্তির জোগান দেয়। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে প্রতি ১০০ গ্রাম সুজি থেকে ৩৬০ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়।
সব থেকে আশ্চর্যের ব্যাপার হল সুজির হালুয়া ডায়বেটিস রোগীরা যেমন খান না, তেমনই সুজি কিন্তু ডায়বেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ। ডায়টেরি ফাইবার শরীরে গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ করে, যা টাইপ ২ ডায়বেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে সহায়ক। সুজিতে উপস্থিত ভিটামিন বি ৬ লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে ফোলেট ডিএনএ উৎপাদনে সহায়ক। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে সুজি একাধিক শারীরিক ক্রিয়াকলাপে সহায়তা করে।
সুজি আয়রন সমৃদ্ধ একটি খাদ্য, সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই এটি রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সহায়ক। সেইকারণেই গর্ভবতী মহিলাদের নিয়মিত সুজি খাওয়া দরকার। কারণ এই সময় অনেকের মধ্যে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ হ্রাস পায়, তার সঙ্গে কমে যায় অক্সিজেনের মাত্রা। আর সুজিতে থাকা আয়রন এই সমস্যা দূর করে। একই ভাবে ঋতুস্রাব চলাকালীনও মহিলাদের এই আয়রন যুক্ত সুজি খাওয়া দরকার। সুজির মধ্যে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল গুলি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস হিসাবে কাজ করে, যার ফলে শরীরে বৃদ্ধি পায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। একই ভাবে এগুলি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। সুজির মধ্যে থাকা নিয়াসিন বা ভিটামিন বি৩ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
সুজির মধ্যে সেলেনিয়াম নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সারের কোষকে বৃদ্ধি হওয়া থেকে প্রতিরোধ করে এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থের সঙ্গে লড়াই করে শরীরকে সুস্থ রাখে। এছাড়াও সেলেনিয়াম মানব শরীরে এক ধরণের বিশেষ প্রোটিন উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইম নামে পরিচিত।