আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, শসা আমরা প্রায়-ই খেয়ে থাকি খাদ্যগুণের কারণে। এর মাঝে পড়ে থাকে এমন কিছু ফল যাদের সম্পর্কে আমরা খোঁজও রাখি না। অথচ হাত বাড়ালেই মিলবে সেই ফল। এমনই এক অবহেলিত ফল হল তেঁতুল। অথচ এর মধ্যে রয়েছেএকাধিক চোখ ধাঁধানো গুণ। তাই বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদরা সবসময়ই এই ফলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
বিশ্বের পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এই ফলে রয়েছে ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-৩, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন থেকে শুরু করে একাধিক উপকারী উপাদান। আর এই সব উপাদানগুলি একত্রে মিলে এই ফলকে এক অনন্য খাবারে পরিণত করে। এছাড়া এই ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর প্রাচুর্যে ভরা যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই নিয়মিত এই ফল খেলে যে শরীর সুস্থ থাকবে তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। এক ঝলকে দেখে নেওয়া দরকার তেঁতুল খেলে আমরা ঠিক কী কী উপকার পেতে পারি।
১. এড়ানো সম্ভব ক্যানসারের ফাঁদ
ক্যানসার রোগটিকে প্রতিরোধ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই কাজে সাহায্য করতে পারে তেঁতুল। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত এই ফল খেলে শরীরে উপস্থিত ফ্রি ব়্যাডিকেলস বা ক্ষতিকারক পদার্থ বেরিয়ে যেতে পারে। ফলে দেহের অন্দরে ক্যানসার কোষ জন্মের সুযোগ পায় না। তাই হেসেখেলে বাঁচতে চাইলে নিয়মিত এই ফল খাওয়া অভ্যাস করুন।
২. বাড়বে বুদ্ধির দাপট
ওয়েবমেড জানাচ্ছে, বুদ্ধির গোড়ায় শান দিতে চাইলে তেঁতুল খেতেই হবে। আসলে এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বি ভিটামিন। আর এই উপাদান ব্রেন ও নার্ভের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেলে বয়সজনিত ব্রেন ও নার্ভের সমস্যাও এড়িয়ে চলা যাবে। সুতরাং একটু বয়স্ক ব্যক্তিদের ডায়েটে মাঝে মাঝে তেঁতুল রাখতে ভুলবেন না যেন! শুধুমাত্র এই কাজটা করতে পারলেই ফল পাবেন হাতেনাতে।
৩. হাড় থাকবে সুস্থ-সবল
এখন কম বয়সেই অনেকের হাড়ের রোগ দেখা দেয়। বিশেষত, অধিকাংশই হাড়ের ক্ষয়জনিত অসুখে আক্রান্ত। আর একবার এই অসুখের খপ্পরে পড়লে ভোগান্তির শেষ থাকে না। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রথম থেকেই হাড়ের যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে তেঁতুল। আসলে এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালশিয়াম যা কিনা হাড়ের ক্ষয় রোধ করার কাজে একাই একশো।
৪. হার্টের জন্য উপকারী
এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই প্রসঙ্গে হেলথলাইন জানাচ্ছে, এতে রয়েছে এমন কিছু পলিফেনলস যা কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী। আর এই সমস্ত ক্ষতিকার উপাদানকে স্বাভাবিকের গণ্ডিতে বেঁধে রাখতে পারলে যে হৃৎপিণ্ডে স্বাস্থ্য ফিরবে তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। সুতরাং হার্ট অ্যাটাক, অ্যারিদমিয়া এবং হার্ট ফেলিওরের মতো রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে চাইলে নিয়মিত তেঁতুল খান। এতেই চটজলদি মিলবে উপকার।
৫. জীবাণু দমনে সিদ্ধহস্ত
আমাদের আশপাশেই রয়েছে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের মতো বিপজ্জনক সব জীবাণুর বসবাস। মুশকিল হল, একটু সুযোগ পেলেই কিন্তু এইসব জীবাণু দেহের উপর আক্রমণ শানায়। তাই এইসব জীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের চারদিকে একটা অদৃশ্য রক্ষাকবচ তৈরি করে এই তেঁতুল।কারণ, এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা এইসব জীবাণুর বিরুদ্ধে একাহাতে লড়াই করতে পারে। তাই নিয়মিত এই ফল খেতে ভুলবেন না।