সন্তানদের দেখভালের জন্য ছুটি নেওয়ায় বেতন বন্ধ অধ্যাপিকার, আদালতের পর্যবেক্ষণ ‘আইনসিদ্ধ অধিকার’ মায়ের

যমজ সন্তানের দেখভালের জন্য অনুমতি ছাড়াই ছুটি নেওয়ায় এক অধ্যাপিকার বেতন বন্ধ করে দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বেতন বন্ধ করে ক্ষান্ত দেওয়া হয়নি, একসঙ্গে আগে পাওয়া বেতন ফেরতেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি পাঠানো হয়েছিল শোকজ নোটিশও। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন সেই অধ্যাপিকা।  শেষপর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন তিনি। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর স্পষ্ট নির্দেশ, কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত খারিজ করে বেতন দেওয়া হোক। একইসঙ্গে বিচারপতি এও নির্দেশ দেন, কলেজ কর্তৃপক্ষকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ওই অধ্যাপিকার সমস্ত প্রাপ্য বেতন পরিশোধ করতে হবে। সঙ্গে এও জানান, আইন মায়েদের সন্তান পালনের জন্য ছুটির অধিকার দিয়েছে। তিনি সন্তানপালনে এক বছরের বেশি ছুটি নিতে পারেন। এটি তাঁর আইনসিদ্ধ অধিকার।
আদালত সূত্রে খবর,ঘটনাটি ক্যালকাটা গার্লস কলেজের। সেখানকার অর্থনীতির অধ্যাপিকা হিসেবে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে কাজে যোগ দেন তিনি। এরপর ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর তাঁর যমজ কন্যাসন্তান হয়। এর কয়েকদিন আগেই তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন। এই ছুটি চলে ২০২২ সালের ১০ মে পর্যন্ত। এদিকে অধ্যাপিকার স্বামী বিদেশে কর্মরত। তাই সন্তানদের দেখভালের জন্য ছুটি শেষ হওয়ার পরে তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আরও অতিরিক্ত ছুটির আবেদন করেন।
এ নিয়ে পরপর তিন বার ছুটির আবেদন জমা দেন অধ্যাপিকা। কিন্তু, প্রতিবারই কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর আবেদন খারিজ করে। এদিকে, সন্তানদের একা সামলাতে না পেরে অধ্যাপিকা ১৮৯ দিনের ছুটি নিয়ে নেন। এরপর কাজে ফেরেন অধ্যাপিকা। কিন্তু, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর বেতন বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয়, কলেজের পরিচালন সমিতি তাঁকে একটি শোকজ নোটিশ পাঠায় এবং তাঁকে আগে যে বেতন দেওয়া হয়েছিল তাও ফেরত দিতে বলা হয়।
এই পরিস্থিতিতে ওই অধ্যাপিকা কলেজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + 17 =