ক্লাস চলাকালীন মোবাইল ঘাঁটতে পারবেন না শিক্ষকেরা, নির্দেশিকা জারি শিক্ষা দফতরের

জলপাইগুড়ির স্কুলে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সারপ্রাইজ ভিজিটের জেরে এবার নড়েচড়ে বসল শিক্ষা দফতর। স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হল, স্কুলে ক্লাস চলাকালীন কোনও মাস্টারমশাই আর ফোন ঘাঁটতে পারবেন না। একাধিক স্কুলে ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু গত সপ্তাহেই হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে যাওয়ার পথে আচমকা ফণীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউশন স্কুলে পরিদর্শনে চলে গিয়েছিলেন। স্কুলে সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়েই কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যান বিচারপতি। স্কুলে ৪৫ জন শিক্ষকের মধ্যে সেদিন কামাই করেছেন ১২ জন শিক্ষক। একসঙ্গে এতজন শিক্ষক কেন ছুটিতে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।

গত সপ্তাহে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এই সারপ্রাইজ় ভিজিটের পরই টনক নড়ে শিক্ষা দফতরের। স্কুলগুলির জন্য জারি করা হয়েছে একগুচ্ছ কড়াকড়ি। জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে সেই কড়াকড়ির কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রধান শিক্ষকের থেকে অনুমতি না নিয়ে কোনও মাস্টারমশাই কোনওরকম ছুটি নিতে পারবেন না। কী কারণে ছুটি নিচ্ছেন, সেই বিষয়েও যাবতীয় তথ্য ও কাগজপত্র জমা করতে হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে, সে কথাও জানানো হয়েছে জেলা স্কুল পরিদর্শকের পাঠানো চিঠিতে। প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্কুলের রেজিস্টার খাতা যেন আপ টু ডেট রাখা হয়।

এখানেই শেষ নয়, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু যেদিন জলপাইগুড়ির ওই সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়েছিলেন, সেদিন স্কুলের সামনে নর্দমায় ভাত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল। এবার স্কুল চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উপরেও জোর দিচ্ছে শিক্ষা দফতর। জেলা স্কুল পরিদর্শকের পাঠানো চিঠিতে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, স্কুলের পরিবেশ যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। পানীয় জলের জায়গা, মিড-ডে মিলের রান্নাঘর, খাওয়ার জায়গা, ক্লাসরুম ও টয়লেটে যাতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয়, সে কথাও জানানো হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − two =