সন্দেশখালি তিন খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এখন সিবিআই হেফাজতে, মনে করালেন বিচারপতি

সন্দেশখালির তিন খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল শেখ শাহজাহানের। তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়। বৃহস্পতিবার এই মামলারই শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চে। এবার এই মামলায় বিচারপতি সেনগুপ্ত রাজ্যকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে এই হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য সময় চাওয়া হল রাজ্য়ের তরফ থেকে। এরই পাশপাশি বিচারপতি এদিন এও নির্দেশ দেন, খুনের অভিযোগে মামলায় নিম্ন আদালতের সমস্ত বিচার আপাতত স্থগিত। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, আগামী ১৯ মার্চ পরবর্তী শুনানি। আগামী শুনানিতে এই সংক্রান্ত সব মামলার কেস ডায়েরি পুলিশকে  হাজির করতে হবে আদালতে, নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। এরই পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিচারপতি কটাক্ষের সুরে জানান, ‘যার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ, তিনিই তো এখন সিবিআই গারদে। সব পক্ষের হলফনামা শোনার পর অর্ডার দেব।’

আদালত সূত্রে খবর, এদিনের শুনানিতে, মৃতদের পরিবারের পক্ষের আইনজীবী মামলার বিষয় উল্লেখ করেন। তাতে শেখ শাহজাহানের নাম উঠে আসে। মামলাকারী আইনজীবী আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে জানান, তিনটি খুনের অভিযোগে এফআইআর-এ প্রথমে নাম থাকলেও, শাহজাহানের নাম অজানা কারণেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুনানির সময়, শাহজাহান নামটা শুনতেই  বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘এখন আর চিন্তা নেই। সিবিআই হেফাজতেই তো আছেন এই মামলার অভিযুক্ত।’

প্রসঙ্গত,  এই মামলা ২০১৯ সালের। পদ্মা মণ্ডল নামে সন্দেশখালির এক মহিলা অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী প্রদীপ মণ্ডলকে খুন করেছিল শেখ শাহজাহানের দল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে হাটগাছি অঞ্চলের ৫৬ নম্বর বুথে বিজেপি জয়ী হয়। এরপরই ভোটগণনার এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর বাড়িতে শাহজাহানের লেঠেল বাহিনী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রদীপের চোখের মণিতে গুলি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ জানানো হয় মৃতের পরিবারের তরফ থেকে। একইসঙ্গে প্রদীপকে তলোয়ার ও ভোজালি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী। এরপর থেকে দীর্ঘদিন তিনি তাঁর সন্তানকে নিয়ে ভয়ে বাড়ি ছাড়া ছিলেন। আর এই মামলায় এফআইআর দায়েরও করেছিলেন। তাতে প্রথমেই নাম ছিল শেখ শাহজাহানের। এদিকে অভিযোগ, এফআইআর-এর প্রথমে নাম থাকলেই শাহজাহানের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। ওই বছরই সন্দেশখালির হাটগাছি অঞ্চলের আরও দুজনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে নদীর ধার থেকে এক জনের হাড়গোড় উদ্ধার হয়। ডিএনএ টেস্ট করে দেখা যায় নিখোঁজ ব্যক্তিরই কঙ্গাল সেগুলো। সেক্ষেত্রে শাহজাহানই মূল অভিযুক্ত। কিন্তু এফআইআর থেকে নাম বাদ দেওয়া হয় তার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 13 =