বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা পুরসভার তরফৎ থেকে এসওপি তৈরির পাশাপাশি বাজারে আনা হচ্ছে অ্যাপও

গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর থেকেই একের পর এক কড়া পদক্ষেপ করে চলেছে কলকাতা পুরনিগম। ইতিমধ্য়েই বরো ১৫ এর প্রায় সব ইঞ্জিনয়রদের বদলির নির্দেশও এসে গিয়েছে। পাশাপাশি বেআইনি নির্মাণে রাশ টানতে আরও কড়া আইনও আসতে চলেছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। পুরনিগমের বিল্ডিং আইনের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে এবার কলকাতা পুলিশের ফৌজদারি আইন। সেই খবর আগেই শোনা গিয়েছিল। এবার বেআইনি নির্মাণ তৈরির পর কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কীভাবে ভাঙা হবে, এই সবকিছু নিয়ে কলকাতা পুরনিগম তৈরি করল এসওপি। এদিন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। যেখানে প্রশাসনিক এবং পুলিশ কর্তারা ছাড়াও কলকাতা হাইকোর্টের নামী আইনজীবীরাও ছিলেন। তারপরই এই এসওপি কপি তৈরি হল বলে জানা যাচ্ছে। যেখানে বলা হয়েছে, বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র বেআইনি নির্মাণ ভাঙার যে নকশা তা ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার এর মাধ্যমে ডিজি বিল্ডিংয়ের কাছে পাঠাবেন। যদি বহুতলের বেআইনি অংশ ছোটখাটো হয় তাহলে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইনের ৪০০ (১) ধারা অনুযায়ী পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের নির্দিষ্ট আধিকারিক এর কাছে বিষয়টি পেশ করতে হবে এবং শুনানির ব্যবস্থা করতে হবে। যদি বেআইনি অংশটি বড় আকারের হয় এবং তা কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইনের ২০০৯ এর আইন ও নিয়ম ভঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে দেখা যায়, তাহলে ৪০০ (৮) আইন অনুযায়ী তা সম্পূর্ণ ভেঙে দিতে হবে। সোজা কথায় গোটা বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ হবে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইন ৪০০ (৮) ধারা বলে। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইনের ৪০১ ধারায় নোটিস দেওয়ার পর ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে সেই নোটিস মোতাবেক কাজ করার। তারপর পুরসভার তরফে যাবতীয় কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শুধু তাই নয়, পাশাপাশি বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে নতুন অ্যাপও আসতে চলেছে বাজারে।  বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতা পুরসভার তরফে এই অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। এখানে নির্দিষ্ট করে যাবতীয় নির্দেশিকা এবং নীতি কথা উল্লেখ থাকবে এই বিষয়ে। যেগুলিতে সমস্যা সেগুলির ক্ষেত্রে কাজ হতে থাকলে বা হয়ে গেলে অ্যাকশন টেকন রিপোর্টও দেওয়া হবে। অর্থাৎ কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে তার যাবতীয় তথ্য সেই অ্যাপে উল্লেখ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ জানান, ‘কর্পোরেশন আইন মেনে এই ধরনের নির্মাণের ক্ষেত্রে কী কী ব্যবস্থা আমরা নিতে পারি তা নিয়েই আজ মিটিং করলাম। কর্পোরেশন আরও কঠোর কোন পথে হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটা রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। কমিশনার নোটিফিকেশন খুব শীঘ্রই বের করা হবে। এদিনের বৈঠকে ল অফিসার, চিফ ল অফিসার, ডিজি বিল্ডিং ছিলেন, সিএমএলও ছিলেন, সিপি ছিলেন, হাইকোর্টের আইনজীবীরা ছিলেন।’

প্রসঙ্গত, এদিনই আবার মেয়রের ‘চোর’ মন্তব্যের প্রতিবাদে এদিন পথে নামেন পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়াররা। পুরনিগমের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় কর্মরত ইঞ্জিনয়রদের। রাজনৈতিক কারণে তাঁদের উপর খাঁড়া নেমে আসছে বলে অভিযোগ তাঁদের। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলছেন, ‘কোনও রাজনীতি নেই। কোনও রাজনৈতিক প্রেশার এলে মেয়রের কাছে ছেড়ে দিন। আপনি আপনার কাজ করুন আইন মেনে। রাজনৈতিকভাবে কোনও প্রেশার থাকলে তাঁকে বলুন মেয়রের কাছে গিয়ে কথা বলুন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 2 =