রাজ্যে একাধিক গণপিটুনির ঘটনার পরে এই ইস্যুতে এবার সরব হতে চলেছে শাসক দল। এদিকে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও গণপিটুনি বিল কার্যকর হয়নি রাজ্যে। কারণ, একটাই। রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া এই বিলে এখনও অনুমোদন নেই রাজ্যপালের। উল্লেখ্য, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ ও মণিপুরে আনা হয়েছিল এই বিল। এদিকে রাজভবনের তরফ থেকে সায় মিলছে না এই বিলে। বিধানসভা সূত্রে খবর, মানা হয়নি সারকারিয়া কমিশনের রিপোর্ট। সারকারিয়া কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক বিচার করে, মানুষের স্বার্থে দীর্ঘদিন বিল ফেলে রাখা যায় না। আর সেই কারণেই এই ইস্যুতে এবার বিধানসভায় ঝড় তুলতে চলেছেন শাসকদলের বিধায়করা।
উল্লেখ্য, ২০১৯-এ গণপিটুনি রুখতে কড়া আইন তৈরিতে বিল এনেছিল রাজ্য সরকার । ২০১৯ সালের ৩০ অগাস্ট রাজ্য বিধানসভায় যে বিল পাশ হয়, তাতে গণপিটুনির মতো অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান পর্যন্ত রাখা হয়। গণপিটুনি সংক্রান্ত এই বিল পাশ হয় ৩০ অগাস্ট ২০১৯। রাজ্যপালের কাছে যায় ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯। গণপিটুনির জন্য শাস্তির কথা বলা হয়েছে এই বিলে, হালকা আঘাত হলে তিন বছরের জন্য সাজা। আঘাত বেশি হলে ১০ বছরের জন্য সাজা ও তিন লক্ষ জরিমানা। মৃত্যু হলে – ফাঁসি অথবা যাবজ্জীবন। এক থেকে পাঁচ লক্ষ জরিমানা। প্ররোচনার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন বছরের সাজা। পাশাপাশি সাক্ষীকে ভয় দেখালে বা দোষ প্রমাণিত হলে – ৫ বছরের সাজার কথা বলা হয়েছে এই বিলে।
ঘটনাচক্রে, গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল পাশ হয়েছিল তিনটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের বিধানসভায়। ২০১৯-এর অগাস্টে রাজস্থান বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে গণপিটুনিতে খুনের অপরাধীর যাবজ্জীবন কারদণ্ড এবং ১ থেকে ৫ লক্ষ টাকার জরিমানার সাজা ধার্য করা হয়েছিল। তার তিন সপ্তাহ পরেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় গণপিটুনিতে খুনের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিল পাশ হয়। ২০২১-এর ডিসেম্বরে ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলেও গণপিটুনিতে ৩ বছর থেকে যাবজ্জীবন জেলের সাজা ধার্য হয়। ২০১৮ সালে মণিপুর বিধানসভায় গোষ্ঠী হিংসা প্রতিরোধী বিল পাশ করানো হয়েছিল। সেখানে আলাদা ভাবে গণপিটুনির কথা বলা হয়নি।