শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে ইডির লুক আউট নোটিস জারির পরই সন্ধেয় মিলল অডিও বার্তা

শুক্রবার ইডির উপর হামলার ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের। প্রায় দেড় দিন অতিক্রান্ত। এখনও কোনও পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না শাহজাহানের। সূত্রের খবর, এবার তাদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করা হল। ইডির ধারনা, শাহজাহান তাঁর পরিবারকে নিয়ে বাংলাদেশের দিকে পালিয়ে গিয়েছেন। সে কারণে তৃণমূল নেতা খুঁজতে বিএসএফ এবং আইবি-র সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সব বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকেও ইতিমধ্যেই বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর হিঙ্গলগঞ্জ ও সন্দেশখালি এলাকায় বিএসএফ-এর জওয়ানদের বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে রবিবারে বাংলাদেশে নির্বাচন। তাই সেদেশেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি। ফলে সেখানে গিয়ে কতটা সুবিধা করতে পারবে তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।

এই সব প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনীতিতে ঠিক সেই সময়েই শনিবার সন্ধেয় সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান পাঠালেন এক অডিওবার্তা। যেখানে তাঁকে বলতে শোনা গেছে, ‘সন্দেশখালির বাসিন্দা এবং তৃণমূলের সৈনিকদের কাছে আমার অনুরোধ সিবিআই ও ইডি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনারা শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ। সকলেই বুঝতে পারছেন এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। ওরা আমায় দমাতে পারলে মনে করছে সন্দেশখালির তৃণমূল দুমড়ে যাবে। এতে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। আমায় মতো হাজারো হাজারো শেখ শাহজাহান আছে। মত্যু একদিন হবেই সবার। কারোর আগে বা কারোর পরে। ইডি-সিবিআই যেটা করছে সেটা ষড়যন্ত্র। আমি কোনও দিন অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত নই। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে অপরাধের সঙ্গে আমি যুক্ত নিজের মুণ্ডু কেটে ফেলব। আপনারা আমার উপর আস্থা রাখুন। আমি দুর্নীতি করিনি। যতদিন বেঁচে থাকব অন্যায় প্রশ্রয় দেব না। আমার কী হবে আমি কোথায় যাব সেটা ভাবার দরকার নেই। তৃণমূল কর্মীদের কাছে আমার আহ্বান আপনারা দলের সঙ্গে থাকুন।’

প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে শুক্রবার সরবেড়িয়ায় শাহজাহানের বাড়ি যায় ইডি আধিকারিকদের একটি দল। পাঁচ সদস্যের শেই দল গ্রামে ঢুকলেই তাঁদের ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তৃণমূল নেতার বাড়ি পৌঁছে তাঁকে ডাকাডাকি করলেও কোনও সাড়া শব্দ মেলেনি। এর পর দরজা ভাঙার উদ্যোগ নিতেই গ্রামবাসীরা ইডি আধিকারিকদের উপর চড়াও হন। তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই সময় শাহজাহান বাইকে করে পালিয়ে যান। তার পর শনিবার সকাল পেরিয়ে গেলেও তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি। খোঁজ মেলেনি তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যেরও।

উল্লেখ্য, সন্দেশখালি-হিঙ্গলগঞ্জ এলাকা বাংলাদেশ সীমান্তের একেবারে কাছাকাছি। সেক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি অপর একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, সন্দেশখালি এলাকায় একাধিক আস্তানা রয়েছে এই তৃণমূল নেতার। সেই গোপন আস্তানাতেও থাকার সম্ভাবনা একেবারে অমূলক নয় বলে ধারনা অনেকেরই।

এদিকে যে সন্দেশখালিতে তাঁকে নাকি এলাকার লোকজন দেবতার মতো পুজো করেন, সেই শেখ শাহজাহান নিজের সাম্রাজ্য ছেড়ে গেলেন কোথায় তা নিয়েই চলছে জোর জল্পনা। এদিকে শেখ শাহজাহানকে যাঁরা দেবতাতুল্য মানেন, সেই অনুগামীরাও মুখ খুলতে চাইছেন না কেউ। তাঁদের বক্তব্য, শেখ শাহজাহান ভীষণ ব্যস্ত মানুষ। সঠিক সময়েই নাকি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে ফিরবেন শেখ শাহজাহান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 3 =