রেশনেই কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি। কোথাও মিলছে নগদ টাকা, কোথাও গিয়ে অফিসাররা হাতে পাচ্ছেন কয়েক কোটি টাকার লেনদেনের হিসেব। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পর এই মামলায় গ্রেফতার হন রাইসমিলের মালিক বাকিবুর রহমান। তাঁর সম্পত্তির বহর দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই। এবার আনিসুর রহমান ও আলিফ নূর গ্রেফতার হওয়ার পর আরও একাধিক তথ্য উঠে আসছে এই মামলায়।
ইডি সূত্রে খবর, বাকিবুর রহমানের কাছ থেকেও টাকা ঢুকেছিল বিদেশ-মুকুলের রাইস মিলে। রাইস মিলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট দেখতে গিয়ে ইডি আধিকারিকরা দেখেন ৯০ লক্ষ টাকা ঢুকেছে সেই অ্যাকাউন্টে।
আনিসুর ও আলিফ নূর তথা বিদেশ ও মুকুলের নামে থাকা হাইটেক রাইস মিলের ব্যাঙ্কের নথিতে ওই লেনদেনের হিসেব দেখা গিয়েছে। ইডি-র আধিকারিকদের ধারনা, ঘুরপথে কালো টাকা সাদা করা হচ্ছিল। আর সম্ভবত সেই কারণেই এই লেনদেন।
ইডি সূত্রে এও জানানো হয়েছে, একটা নয়, একাধিক রাইস মিল আছে দুই ভাইয়ের। কী কারণে এই টাকা ঢুকেছিল, তা জানতে জেরা করা হবে দুই ভাইকে। ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল, নাকি বাকিবুর দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করেছিল তা জানার চেষ্টা করছে ইডি। ইডি-র সন্দেহ ঘুরিয়ে আরও টাকা ঢুকেছে রাইস মিলে।
অন্যদিকে ইডির তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী যখন এসএসকেএম হাসপাতালের বেডে শুয়েছিলেন, তখনও নাকি ওই ভাগের টাকা দিতে বলেছিলেন মুকুল ও বিদেশকে। সূত্রের খবর, হাসপাতালে থাকাকালীন নাকি বালু ১০ লক্ষ টাকা করে দিতে বলেছিলেন দুই ভাইকে। আর এই ১০ লক্ষ টাকা হল সুদ বাবদ। অর্থাৎ দুর্নীতির যে টাকা তাদের কাছে আছে, সেটার সুদই নাকি দেওয়ার কথা ছিল বালুকে।
আর এখানেই প্রশ্ন, যে টাকার সুদই হয় ১০ লক্ষ, তাহলে তার আসল কত তা নিয়েও। অর্থাৎ ঠিক কত টাকা জমা আছে রহমান ভাইদের কাছে তা এবার জানতে চান ইডির আধিকারিকেরা। আধিকারিকদের দাবি, রেশন বন্টন দুর্নীতির ভাগের ২০ কোটি টাকা তাঁদের কাছে জমা আছে। আদালতে এ কথা জানিয়েছে ইডি। তারই মাসের সুদ হল ১০ লক্ষ টাকা। ইডি-র দাবি, ওই টাকাই মাসে মাসে পরিবারকে দিতে বলেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়।
ইডি সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে সরকারি হাসপাতালে বসে লেখা চিঠিতে শুধু সুদের টাকা হিসেবেই ১০ লক্ষ টাকা দিতে বলেছিলেন বালু, আসল টাকায় হাত দিতে বারণ করেছিলেন। অঙ্কের হিসেব ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে আদালতে।