পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীই আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবে, এমনটাই আদেশ হাইকোর্টের। এই সিদ্ধান্তে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকেও কোনও বাধা আশেনি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই রায় তো হাইকোর্ট দিয়েছিল, তাহলে রাজ্য সরকার তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে গেল কেন? রাজ্য সরকার কি জানত না যে এই রায় বজায় থাকবে? জানত, ভালো করেই জানত। কিন্তু বিরোধীরা যে কেন্দ্রের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এই রাজ্য শাসন করতে চায়, কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা দিয়ে য়ে রাজ্যের ওপর চাপ তৈরি করতে চায় তা স্পষ্ট হল। আরও সোজা করে বললে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাতকেই মানুষের সামনে তুলে ধরাটাই শ্রেয় বলে মনে করেছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রে বিজেপি, তারা মানুষকে নিয়ে নয়, ইডি, সিবিআইকে দিয়ে শাসকদলকে ভয় দেখাচ্ছে। এখন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে চাপ তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই ন্যারেটিভটাই আপাতত তৃণমূল সুপ্রিমোর হাতে এক বড় অস্ত্র। রাজ্যের বা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিপরীতে অবস্থান করতে দেখা গেল বিরোধীদের। বিরোধী শিবিরের প্রত্যেকেই প্রায় হাত ধরাধরি করে সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছে। হয় হাইকোর্টে নয়তো সুপ্রিম কোর্টে। কাজেই এটা ঠিক লিগাল ব্যাটল নয়। এটা আদতে এক পলিটিকাল ব্যাটল, রাজনৈতিক লড়াই, সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, পঞ্চায়েত, কোর্টে জিতল বিরোধীরা, মাঠে জিতবে কে?
আমরা সাংবাদিকরা জানি, বিরোধী রাজনৈতিক দল জানে, শাসকদল জানে, নির্বাচন কমিশন জানে, বিচারকও জানেন যে কেন্দ্রীয় বাহিনী না হয় এল, তারপর? কারা তাদের জায়গা মতো পাঠাবে? কাকদ্বীপে যাবে না কঙ্কালিতলা, সেটা ঠিক করবে তো রাজ্য নির্বাচন কমিশন। যার মাথায় রাজীব সিনহা। মমতার সুপারিশ নিয়েই তো তিনি ওই পদে বসেছেন। এই সিদ্ধান্ত তো সুকান্ত মজুমদার বা মহঃ সেলিম নেবেন না। কাজেই সবাই জানে এই লাফালাফিটা আদতে দু’দিনের। শাসকদলও জানে, জানে বিরোধীরাও। খেলা শেষের ফল কী হয় সেটাই দেখার।