সন্দেশখালিতে সোমবার সকালে হাজির জাতীয় মহিলা কমিশন। গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। মহিলাদের উপর কী ধরনের অত্যাচার চলছে সে ব্যাপারে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতেই জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল পৌঁছায় সন্দেশখালি।পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে সরাসরি দোষারোপ করেন তিনি। একইসঙ্গে এও জানান, অভিযোগ শোনার পর তিনি রিপোর্ট জমা দেবেন রাষ্ট্রপতিকে। শুধু তা নয়, সন্দেশখালি ইস্যুতে এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সদস্যরাও রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানান। সন্দেশখালি পরিদর্শনের পর এদিন রেখা শর্মা বলেন, ‘দিনের পর দিন এখানে মহিলাদের নির্যাতন করা হয়েছে। আমি নিজে ১৮টি অভিযোগ পেয়েছি। দুইজনের কাছ থেকে ধর্ষণের অভিযোগ পেয়েছি। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা ছাড়া উপায় নেই।’ এদিকে পালটা, চোপড়ার ঘটনা নিয়ে কেন জাতীয় মহিলা কমিশন সরব নয়, সে নিয়ে প্রশ্ন তোলে তৃণমূল কংগ্রেস।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বসিরহাটের সন্দেশখালিতে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল এদিন গ্রামের নির্যাতিতা মহিলা ও সাধারণ মানুষের সমস্যা শোনার পর সরাসরি টোটো করে গ্রাম থেকে বেরিয়ে সন্দেশখালি থানাতে যান৷ থানায় ঢুকে প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সঙ্গে চারজন নির্যাতিতা মহিলা ছিলেন। একসঙ্গেই সেই মহিলাদের নিয়ে টোটো করে থানায় যান জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা৷ রেখা শর্মার সঙ্গে আসা মহিলারা সবাই আন্দোলনকারী গ্রামবাসী বলে জানানো হয়। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা থানায় ঢুকেছেন খবর পেয়ে আরও অনেক গ্রামবাসীরা সাহস পেয়ে তারা অভিযোগ জানাতে থানায় আসেন৷ তবে তাঁদেরকে থানার গেটের সামনে আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, এর আগে কলকাতায় নেমেই রেখা শর্মা জানিয়েছিলেন, সন্দেশখালির ঘটনায় পুলিশের উপর ভরসা করা যায় না। পুলিশ মহিলাদের অভিযোগ গ্রহণ করছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন সহায়তা করেনি বলেও এরকম নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন রেখা দেবী। উল্লেখ্য, এর আগে এসসি কমিশনের প্রধান অরুণ হালদারের গলাতেও শোনা গিয়েছিল এই একই কথা। রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট দিয়ে তাঁরা রাষ্ট্রপতি শাসনের বলবৎ করার আর্জি জানান। অন্যদিক, এদিনের জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যদের অভিযানের মাঝেই চোপড়ার প্রসঙ্গ টেনে আনেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, সন্দেশখালিতে গিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা মহিলাদের সঙ্গে দেখা করলেও যে মহিলারা তাঁদের বাচ্চাদের হারালো উত্তর দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় সেখানে তাঁরা যাবেন কি? সন্দেশখালির ঘটনায় পুলিশ নিয়মমাফিক কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।