প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ডিভিশন বেঞ্চে ধর্মতলায় বিজেপির সভা সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ধর্মতলাতেই সভা করতে পারবে বিজেপি। এই মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতির একাধিক মন্তব্যকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, এদিনের এই নির্দেশ আগামিদিনে একাধিক মামলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে আইনজীবীরা।
বিজেপি ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনে সভা করতে চাইলে সিঙ্গল বেঞ্চ তাতে অনুমতি দিলেও সায় ছিল না রাজ্যের। এরপরই তারা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। প্রসঙ্গত এই ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনেই হয় তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সভা। রাজ্যের তরফে বিজেপির সভায় প্রথম থেকেই সায় ছিল না। এদিন শুনানিপর্বে রাজ্যের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত প্রস্তাব দেন, রানি রাসমণি রোড বা ওয়ার হাউজের সামনে সভা করতে পারে বিজেপি। কারণ হিসাবে কলকাতার রাস্তায় যানজটের প্রসঙ্গ সামনে আনা হয়। এদিকে এদিন বিজেপির হয়ে সওয়াল করতে দেখা যায় আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য, সূর্যনীল দাসকে।
রাজ্যের এই যুক্তি শুনে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মন্তব্য করেন, পশ্চিমবঙ্গে এমন ঘটনা নতুন নয়। কেউই রাজ্যের মানুষকে নিয়ে ভাবেন না। তা তারা সরকারি কর্মচারি হোন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিংবা রাজনৈতিক দল। রাস্তা আটকে মিছিল মিটিং করেন সকলেই। পুলিশ তাতে অনুমতিও দেয়। এরই রেশ ধরে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘আমি ২ বছরের উপর এখানে আছি, আমি দেখেছি এটা এখানে খুব সাধারণ ব্যাপার। বৃহস্পতিবারও পুলিশের তরফ থেকে ২টি চিঠি পাঠানো হয় আমাদের বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করা নিয়ে।’
এদিকে এদিন আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনে শুধুমাত্র ২১ জুলাইয়ের সভা হয়। তখনই বিচারপতি জানতে চান, এর কারণ কী। ২১ জুলাইয়ের বিশেষত্বই বা কোথায় তাও জানতে চায় আদালত। এরপরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা একটা কাজ করছি, ২১ জুলাইয়ের সভাও বন্ধ করে দিচ্ছি। কোনও সভা নয়, কোনও কর্মসূচি নয়, কোনও প্রতিবাদ নয়। সকলকে সমানভাবে দেখাই একমাত্র সমাধান।’