কলকাতা পুরসভার স্কুলগুলিতে বিশ্বকর্মা পুজোর ছুটি বাতিল করে ইদের ছুটি দু’দিন করা হয়েছে, এমনই অভিযোগ, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, পুরসভার শিক্ষাদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে আঘাত পেয়েছেন সনাতনীরা। বিজেপি নেতার আক্রমণ, পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ তৈরি করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সামনে এনেছেন তথ্যও। সেখানে তিনি জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিশ্বকর্মা পুজোর যে ছুটি ছিল, তা কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত সমস্ত স্কুলগুলিতে বাতিল করা হয়েছে। পরিবর্তে ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল, ২০২৫ ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক একটি ভিডিয়ো বার্তায় এও জানান, ‘বাঙালির জানা দরকার, পশ্চিমবঙ্গটা ইতিমধ্যেই পশ্চিম বাংলা হয়ে গিয়েছে। এবার কলকাতা শহরে বিশ্বকর্মা পুজোর ছুটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। আর সেই ছুটি বাতিল করে কলকাতা পৌরসভার স্কুলগুলিতে ইদ উল ফিতারের ছুটি দুদিন করা হল। সারা ভারতে ইদ উল ফিতারের ছুটি একদিন হয় কিন্তু কলকাতা পুরসভা যেহেতু ফিরহাদ হাকিমের দ্বারা শাসিত, তাই এখানে এই ছুটি দুদিন করা হল। হক মার্কেটে অবস্থিত কলকাতা পুরসভার শিক্ষাদফতরের এই বিজ্ঞপ্তিটি প্রত্যেক সনাতনীকে আঘাত করতে পারে।’
বিজেপি এই নিয়ে সরব হতেই পিছু হটেছে কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যেই ওই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে বিবৃতি জারি করেন কলকাতা পুরসভার পুর কমিশনার।
এর পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার তরফে এই ছুটি বিতর্কে বলা হচ্ছে, শিক্ষা বিভাগের যিনি চিফ ম্যানেজার সিদ্ধান্ত ধারা, তিনি কলকাতা পুরসভার পুর কমিশনার অথবা পুরসভার শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত সন্দীপন সাহা-কারোর সঙ্গেই কথা না বলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিজেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। আর সে কারণে কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত ধারাকে শোকজও করা হয়েছে। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, তিন দিনের মধ্যে এর উত্তর দিতে হবে। তিনি কেন কী উদ্দেশ্যে নিজের মতো করে এত স্পর্শকাতর বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে ওই চিফ ম্যানেজার।
এই প্রসঙ্গে শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহা জানান, ‘আমরা শোকজ করেছি, তিনি এরকম একটা সার্কুলার কীভাবে বার করলেন? এটা তাঁর এক্তিয়ার বহির্ভূত। এরকম কোথাও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ডিসিপ্লিনারি অ্য়াকশন তাঁর বিরুদ্ধে নেব। আমার বা মেয়রের কোনও অ্যাপ্রুভাল সিগনেচার কোথাও পাবেন না।’
সর্বোপরি মেয়ার ফিরহাদ হাকিমও জানান, ‘এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা উচিতই না। কমিশনারের অনুমতি কেন নেয়নি, সেটা আমি স্পষ্টভাবে জিজ্ঞাসা করতে বলেছি। এরকম কোনই ছুটি বিজ্ঞপ্তি হয় না। সরকারি ছুটি আমাদের ছুটি, সরকারি ক্যালেন্ডারে যা ছুটি, সেটাই আমাদের ছুটি। সুতরাং এখানে আলাদা করে কোনও নোটিফিকেশন বানানোর কোনও মানেই হয় না। আমি বাংলায় সব সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। সেই কারণে আমরা সব ধর্ম উৎসবেই আমরা আনন্দ করি।’