বেআইনি হকার উচ্ছেদ অভিযান আরও জোরদার করার জন্য বৃহস্পতিবার নবান্নে ফের বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকে জেলাশাসক, বিভিন্ন দফতরের আমলা, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপারদের থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, অভিযানের পদ্ধতিতে বদল ঘটাতে হবে কি না, তা চালাতে গিয়ে কোনও বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে কি না, সেসব নিয়ে পর্যালোচনা হবে ওই বৈঠকে।
এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুধবার অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার বেছে বেছে কয়েকটি জায়গায় দখলমুক্তি অভিযান চালাচ্ছে। একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে মদত দেওয়ার জন্যই এই কাজ করা হচ্ছে। শুভেন্দুর দাবি, লোকসভা নির্বাচনে শহরাঞ্চলে শাসকদলের ভোট কমে গিয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী রেগে গিয়েছেন। ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে তিনি বিশেষ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে কোনও আগাম নোটিস না দিয়ে। এই অভিযান বন্ধ না করলে শুক্রবার থেকে বিজেপি রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামবে বলে তিনি জানান। বিরোধী নেতা বলেন, হকারদের পাশে বিজেপি থাকবে। বিভিন্ন ক্লাব, প্রতিষ্ঠান, সাধারণ মানুষকেও হকারদের পাশে থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। বিরোধী দলনেতা এদিন বলেন, আমরা দখলদারির বিরুদ্ধে। শহরের সৌন্দর্যায়নের পক্ষে। কিন্তু দখলদারির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে যদি গরিব মানুষের পেটে লাথি মারা হয়, তা বিজেপি মেনে নেবে না। সাহস থাকলে সরকার নিউমার্কেট, খিদিরপুর, ধর্মতলা, পার্কসার্কাসে বেআইনি হকারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাক। মানিকতলা, হাতিবাগান, ভবানীপুর, যদুবাবুর বাজার, বিধাননগরে শুধু অভিযান কেন। শুভেন্দুর দাবি, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে পুর প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছে। আগের দিনের মতো সেখানেও ব্রাত্য তাহেরপুর এবং ঝালদা পুরসভা। তিনি বলেন, এই দুই পুরসভা বিজেপির হাতে নয়, অন্য বিরোধীদের হাতে। তবু আমরা তাদের পাশে আছি।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার নবান্নে বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যান, পুলিশ, আমলাদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পুর পরিষেবা নিয়ে তীব্র উষ্মাপ্রকাশ করেন। মমতা বলেন, পুরসভাগুলি শুধু টাকা খাওয়া আর জমি কেনাবেচার আখড়া হয়ে উঠেছে। পরিষেবার দিকে কারও নজর নেই। মানুষ যদি পুর পরিষেবাই না পায়, তাহলে আর পুরসভা রেখে লাভ কী। যত্রতত্র লোক বসে যাচ্ছে। সরকারি জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে পুরসভা, পুলিশের মদতে। পুলিশ চোখে ঠুলি লাগিয়ে বসে আছে। এই অবস্থা চলতে পারে না। কাজ না করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ধমক খাওয়ার পর বস্তুত সোমবারা রাত থেকেই বিভিন্ন জেলায় পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। মঙ্গলবার এবং বুধবার রাজ্য জুড়ে দখলমুক্তি অভিযান চলে। অনেক জায়গায় বুলডোজার দিয়ে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়।