লোকসভা নির্বাচনে মিটিং, মিছিল, সভা, রোড শো, দেওয়াল লিখন আর প্রচার তথা গোটা নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীপিছু খরচ হয় প্রচুর টাকা। এবার সেই খরচের ঊর্ধ্বসীমাই বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত লোকসভা ভোটে প্রার্থীপিছু প্রচারের খরচের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু পাঁচ বছরের ব্যবধানে সেই খরচের ঊর্ধ্বসীমা এক লাফে ২৫ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ এই নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য খরচের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৯৫ লাখ টাকা করেছে কমিশন। আর কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়েই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এটা নির্বাচন কমিশন বেশকিছুদিন আগই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে জানিয়ে দিয়েছিল। এরই মধ্যে দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের বক্তব্য, অর্থাভাবে নির্বাচন লড়তে পারছি না। দেশের অর্থমন্ত্রী, যাঁর প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ আছে, তিনি বলছেন অর্থাভাবে নির্বাচনে লড়তে পারছি না। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, এই ৯৫ লাখ টাকা ঊর্ধ্বসীমা কি শুধুই কাগজেকলমে না টাকা নেই বলতে তিনি বুঝিয়েছেন ৯৫ লাখ টাকা খরচের ক্ষমতা নেই।
এদিকে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার আরও প্রশ্ন তোলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যখন ৯৫ লাখ টাকা ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করছে, সেটা কি বাস্তব নির্ভর?’ এক্ষেত্রে জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবি, ‘নির্মলা সীতারমণের কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এর সঙ্গে গ্রাউন্ড রিয়্যালিটির কোনও যোগাযোগ নেই।’
অন্যদিকে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার মনে হয় ১৬ – ১৭ লাখ মানুষের একটা লোকসভায় ৯৫ লাখ টাকা বেশ কঠিন।’ পাশাপাশি সিপিএম নেতা তথা লোকসভা ভোটের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ৯৫ লাখ টাকা ঊর্ধ্বসীমা করে দিয়েছে। আমার বিবেচনায় এতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। নির্বাচনী প্রচারের জন্য এটা যথোচিত বলেই আমি মনে করি। এই বিষয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই। তবে যাঁরা মনে করবেন হেলিকপ্টার ঘোরা ছাড়া বা বিলাস করা ছাড়া ভোট হয় না, বা যাঁরা মনে করবেন ভোট মানে টাকার খেলা, তাদের এতে অসুবিধা হতে পারে।’