অনুব্রত মণ্ডলকে মধ্যমণি করে হল কোর কমিটির বৈঠক

বীরভূমের জেলা সভাপতির পদ অবলুপ্ত করার পর  দলের দেখভালের দায়িত্বে এখন কোর কমিটি। এতো কিছুর পরেও  গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা কিছুতেই উপড়ে ফেলা যাচ্ছে না বীরভূমের মাটি থেকে। এবার সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানা নিয়েই মূলত আলোচনা হল শনিবারের এই কোর কমিটির বৈঠকে, এমনটাই সূত্রে খবর। আর এই বৈঠকে হাজির ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ দুজনেই। একইসঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভাজনমূলক পোস্ট করলে কড়া পদক্ষেপ করবে দল, এমনটাই জানিয়েছেন কোর কমিটির আহ্বায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
সত্রে এ খবরও মিলেছে, বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে মধ্যমণি করেই হল তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা কোর কমিটির বৈঠক। উপস্থিত ছিলেন ৯ জন কোর কমিটির সদস্যই। অনুব্রত মণ্ডল, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ফায়জুল হক ওরফে কাজল শেখ, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ওরফে রাণা সিং, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, তৃণমূল জেলা সম্পাদক সুদীপ্ত ঘোষ। ছিলেন  দুই আমন্ত্রিত সদস্য বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় এবং বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল।
প্রসঙ্গত, কাজল শেখ ও অনুব্রতর  দ্বন্দ্ব মেটাতে কলকাতায় দুজনকে আলাদা করে নিয়ে বৈঠক করতে হয়েছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ও ফিরহাদ হাকিমকে ৷ সূত্রে খবর, এই বৈঠকে সাংবাদিকদের সামনে একে অপরের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে দুজনকেই। পাশাপাশি, দলের যে কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করবে বা সিদ্ধান্ত নেবে কোর কমিটিই ৷ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বর এই নির্দেশের পরেই বোলপুর দলীয় কার্যালয়ে হল কোর কমিটির বৈঠক।
শনিবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কোর কমিটির আহ্বায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘আগামী ২৫ জুন বীরভূম জেলা কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ৷ তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ ২৯ জুন হবে জেলা কমিটির বৈঠক। যেখানে  মূলত ২১ জুলাই কলকাতায় শহিদ স্মরণসভায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হবে ৷ এছাড়া, ১২ জুলাই ফের কোর কমিটির বৈঠক হবে ৷ আর এই বৈঠক হবে সিউড়িতে দলীয় কার্যালয়ে।’ পাশাপাশি তাঁর সংযোজন,’২১ জুলাই সফল করতে জেলা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ আর দলে কোনও কোন্দল থাকবে না ৷ সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি ও সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুকে যে কোনও দলের প্রিয় নেতাকে নিয়ে পোস্ট করতেই পারেন ৷ কিন্তু, বিভাজন মূলক পোস্ট করলে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে।’
এদিনের এই কোর কমিটির বৈঠকে জেলা সভাধিপি তথা কোর মিটির সদস্য কাজল শেখ জানান, ‘যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলি নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছি। বীরভূম জেলা আগামীদিনে একসঙ্গে  লড়াই করব কোর কমিটির আহ্বায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়র নেতৃত্বে।’  এদিকে সূত্রে খবর মিলছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বে নির্দেশ মতো কাজল শেখ ও অনুব্রতর দ্বন্দ্ব মেটাতে দীর্ঘ আলোচনা হয়। যার শুরু হয় শনিবার বিকেল ৩টে ৩০ মিনিট থেকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয় ৷ ১ ঘণ্টা বৈঠক হয় ৷ তবে কোর কমিটির বৈঠক শেষে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজল শেখ, শতাব্দী রায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিলেও কোনও মন্তব্য করতে চাননি অনুব্রত মণ্ডল। বৈঠক শেষে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, ‘দল তো একটাই। সবাই এক সঙ্গে কাজ করা উচিত ৷ এত বড় দলে মতবিরোধ হতেই পারে ৷ তারজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধঅযায় আছেন ৷ ভোট এলে সবাই তৃণমূল। এটা আমি দেখেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + 13 =