রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় মৌখিক বয়ান ছাড়া আর বিশেষ কোনও প্রমাণ দিতে পারল না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে ২০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি, কিন্তু তার প্রমাণ কোথায় তা জানতে চান বিচারক। এদিনের শুনানিতে বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘রেশন বণ্টনে ২০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলছেন। মৌখিক বয়ান ছাড়া তার প্রমাণ কোথায়?’ উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েন ইডি-র আইনজীবী।
এদিকে মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হয় রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বিশ্বজিৎ দাস ও বাকিবুর রহমানকে। সওয়াল জবাবের সময়ে বিশ্বজিতের আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘মৌখিক বয়ান ছাড়া ইডি-র হাতে কোনও তথ্য প্রমাণ নেই। ফরেক্স ব্যবসার মাধ্যমে টাকা পাচারের যে কথা বলা হচ্ছে তাও এক সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে।’ ওই সাক্ষী বিশ্বজিতের সঙ্গে পুরনো বিবাদের জেরে ওই বয়ান দিয়েছেন বলে আদালতে ইডি-র আইনজীবী উল্লেখ করেন। তাঁর বক্তব্য, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আদতে সেই ব্যক্তির মোবাইল থেকেই নথি মিলেছিল। জনৈক সেই ব্যক্তি এখন দুবাই চলে গিয়েছেন বলে বিচারককে জানান ইডি-র আইনজীবী। তবে এদিন বিচারক মৌখিক নয়, দুর্নীতির যথাযথ প্রমাণ চান। আদালতের এই প্রশ্নের ভিত্তিতে ৫ জুলাই উত্তর দেবে ইডি।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলেই রেশন দুর্নীতি মামলা সংক্রান্ত তৃতীয় চার্জশিট আদালতে জমা করে ইডি। ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস এবং তাঁর বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। চার্জশিটে ইডি উল্লেখ করে, ২০১৪-১৫ সালে রেশন দুর্নীতির ৩৫০ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ হয়ে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচারের অভিযোগও করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের আরও দাবি, এই মামলায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ১১টি সম্পত্তি ‘অ্যাটাচড’ হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০০০ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের কর্মচারি ছিলেন বিশ্বজিৎ। এরপর কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। রেশন দুর্নীতি মামলায় মূল অভিযুক্তের তালিকায় তাঁর নাম উঠে আসে।