ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির অশান্তিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে সিট গঠনের নির্দেশ আদালতের

ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির অশান্তি নিয়ে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। সেই মামলায় রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে সিট গঠনের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মঙ্গলবার হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, মামলকারীর অভিযোগ এফআইআর হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এডিজি পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে এই তদন্তের দায়িত্ব দিতে হবে। যে সব ভক্তদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তাঁদের জামিন দিতে হবে। তবে পাশাপাশি এ নির্দেশও দেওয়া হয়েছে এই ধৃতরাতদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে সপ্তাহে দু’দিন দু ঘণ্টার জন্য দেখা করবেন। একইসঙ্গে তাঁদের উদ্দেশে এ নির্দেশও দেওয়া হয় জেলা না ছাড়ারও। শুধু তাই নয়, যেদিন বিজেপি এবং তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে তোলপাড় হয়েছিল ঠাকুবাড়ি থেকে হাসপাতাল চত্বর সেদিনের মন্দির ও চাঁদ পাড়া হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।একইসঙ্গে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এ নির্দেশও দেন, আগামী ১৮ জুলাই তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে তদন্তকারী আধিকারিককে।

এখানে বলে রাখা শ্রেয়, মামলাকারী শান্তনুর অভিযোগ ছিল, গত ১১ জুন পাঁচ হাজার পুলিশ মতুয়া মন্দিরে যায়। সে বিষয়ে আগাম কিছুই জানানো হয়নি। সেখানে তখন রথের জন্য মিটিং চলছিল। বহু ভক্তের সমাগম ছিল মন্দির চত্বরে। সেই সময় পুলিশ তাঁদের মারধর করে। পাশাপাশি  এই ঘটনায় আবার পুলিশই পাঁচটি এফআইআর করে। একটি মামলায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ-সহ বাধা দানের অভিযোগও আনা হয়। এই প্রসঙ্গেই মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, ‘প্রায় সব মামলার বয়ান একই। শুধু বিভিন্ন নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। প্রায় একই সময়ে, একইদিনে। পাঁচ নম্বর এফআইআরটি করেন স্থানীয় বিএমওএইচ।’

এদিকে এদিনের এই মামলায় সওয়াল করার সময়, রাজ্যের তরফে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, দুটি ঘটনা দুই জায়গায়। একটি ঠাকুর বাড়ি ও অন্যটি হাসপাতালে। তিন জন মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। তাই তিনজন অভিযোগ করেছেন। আর হাসপাতালে অশান্তির জন্য হাসপাতাল অভিযোগ করেছে। সব পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারপতি মান্থা এই মামলার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত রবিবার কয়েকশো পুলিশ কর্মী ঠাকুরবাড়িতে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মতুয়া ধামে মিছিল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সম্মতি ছিল না মতুয়া সম্প্রদায়ের। এই নিয়ে শুরু হয়েছিল জলঘোলা। পরে পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এদিকে ১১ জুনের এই গোটা ঘটনায় আটজন ভক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দু’দিন পরে তারা জামিন পেলেও নতুন মামলায় পুলিশ তাঁদের শোন অ্যারেস্ট করে। এখন তাঁরা পুলিশ হেপাজতে। থানা অভিযোগ না নেওয়ায় ১৩ জুন ডিজি-র অফিসে অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু সেই অভিযোগে কোনও এফআইআর হয়নি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 4 =