শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নয়, পুলিশকে নির্দেশ আদালতের

পুলিশকে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে চলার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারী এবং এফআইআর-এ নাম থাকা কোনও চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। তবে তদন্ত চলবে। পুলিশকে ধীরে চলো নীতি নিয়ে চলতে হবে। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। একইসঙ্গে হাইকোর্ট এদিন এ নির্দেশও দেয়, যোগ্য শিক্ষক, শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ ২০১৬-র সদস্যরা সেন্ট্রাল পার্কের সুইমিং পুল লাগোয়া অঞ্চলে অবস্থান বিক্ষোভ করতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে ২০০ জন ব্যক্তি থাকতে পারবেন।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, শুক্রবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি বলেন,সম্ভব হলে প্রশাসন অস্থায়ী তাঁবু টাঙিয়ে দেবে। বায়ো টয়লেট, পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেবে প্রশাসন। একইসঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে যে শোকজ নোটিস জারি করা হয়েছে সেটাও কার্যকর করা যাবে না।
এছড়াও পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ। বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থানরত শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় জড়িয়েছেন তৃণমূল সমর্থকরাও। ফলে তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। শুধু তাই নয়, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দুই শিক্ষক নেতা ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল ও সুদীপ কোনার। এদিন সেই মামলার শুনানিতে চাকরিহারাদের উদ্দেশে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন,’আপনারা ওখানে ১৫-১৬ দিন আন্দোলন করছেন। আপনাদের প্রতি আমি সমব্যথী। কিন্তু আমাকে তো সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে। আপনারা উল্টোদিকে সেন্ট্রাল পার্কে অবস্থান করুন।’
সেন্ট্রাল পার্কে একসঙ্গে ২০০ জন আন্দোলন করার প্রস্তাব দেয় হাইকোর্ট। যা নিয়ে রাজ্যের আইনজীবী সওয়াল করেন, এই ২০০ জনের মধ্যে যেন কোনও বহিরাগত না থাকে, সেই দায়িত্ব আন্দোলনকারীদের নিতে হবে। এই নির্দেশের প্রেক্ষতেই চাকরিহারাদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, কোনও অধ্যাপক, চিকিৎসক যখন সেখানে আসেন, তখন তাঁদের কি আমরা বহিরাগত বলব ?
এদিন রাজ্যের তরফে সওয়াল করা হয়,’এই মামলাকারীরা যেন বিধাননগরে ঢুকতে না পারে। আর যেন কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি অবস্থান মঞ্চে ঢুকতে না পারেন।’ যার পাল্টা চাকরিহারাদের আইনজীবী বলেন,’ওখানে কোনও বহিরাগত নেই। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে আমরা ডাকিনি। কেউ আসলে আমরা কি করব?’
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মে বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনরত চাকরিহারাদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। আবার সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ভাঙচুর, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদানের অভিযোগ ওঠে চাকরিহারাদের একাংশের বিরুদ্ধে। এফআইআর দায়ের হয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফেও ওই চাকরিহারা শিক্ষকদের শোকজ করা হয়। এদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দেন, এফআইআর-এ নাম থাকা কোনও চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের শোকজ  নোটিস নিয়েও স্বস্তি পেলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। তবে এদিন চাকরিহারা শিক্ষকদের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন,’আপনাদের প্রতি সবাই সমব্যথী। আইন – শৃঙ্খলার অবনতি যেন না হয় সেটা খেয়াল রাখুন। এমন ব্যবহার করুন যাতে শিক্ষকদের সম্মান থাকে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 2 =