এসএসসি মামলায় মুখ্যসচিবের রিপোর্টে ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআইকে কনসেন্ট দেওয়া হবে কি না, সেই ব্যাপারে লোকসভা ভোটের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান মুখ্যসচিব। এদিকে সাতটা চিঠি পাঠানো হয়েছে সিবিআই-এর তরফ থেকে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব তার রিপোর্টে লেখেন, ডিপার্টমেন্টকে পাঠানো হয়েছে আদালতের নির্দেশ। সাধারণ নির্বাচনের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হবে কি না। এরপরই মঙ্গলবার মুখ্যসচিবকে সময় বেঁধে দিতে দেখা যায় হাইকোর্টকে। সঙ্গে এও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২৩ এপ্রিলের মধ্যে জানাতে হবে তাঁরা সিবিআই তদন্তে অনুমতি দেবে কি না। কারণ, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যে আধিকারিকদের নাম জড়িয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গেলে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে। সেই অনুমতি না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সিবিআই। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। একইসঙ্গে আদালতের তরফ থেকে এ প্রশ্নও তোলা হয়, সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে বলে কাউকে গ্রেফতার করছেন না? কোনও মামলার তদন্ত হচ্ছে না? কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না? আর কোনও কাজ করছে না প্রশাসন?
শুধু তাই নয়, মুখ্যসচিবের রিপোর্টে বিরক্ত হয়ে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এদিন এ প্রশ্নও করেন, ‘রাজ্যের সবচেয়ে উচ্চপদে থাকা আধিকারিক সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের বুদ্ধি প্রয়োগ করে। এভাবে কি সত্যি তদন্তকারী সংস্থা কোন কাজ করতে পারবে? এই মামলায় অভিযুক্তরা হয়ত সরকারি আধিকারিক বা মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু সেই অভিযুক্তদের জন্য রাজ্য চুপ করে বসে থাকবে?’ এই মানুষগুলোর কথা ভাবুন যারা বসে আছে তদন্ত করতে এসে আপনাদের জন্য। আমরা চাই সরকারি আইনজীবী নিজের দায়িত্ব পালন করুন।
এরই পাশাপাশি এদিন এসএসসি মামলার শুনানিতে বিচারপতি বাগচির মন্তব্য, ‘আদালত মনে করছে, মুখ্যসচিব যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন সেখানে কোনও বুদ্ধি প্রয়োগ করা হয়নি। তিনি তাঁর দায়িত্ব উপলব্ধি করতে পারেননি। আদালত আশ্চর্য হয়েছে যে রাজ্যে সবচেয়ে উচ্চপদে থাকা আধিকারিক কোনও অজ্ঞাত কারণে নিজের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা আশা করব প্রভাবশালী অভিযুক্তদের পদ মুখ্যসচিবকে প্রভাবিত করবে না। একজন মুখ্যসচিব স্বাধীনভাবেই সিদ্ধান্ত নেবেন।’ এরই রেশ ধরে বিচারপতি এদিন এও বলেন, ‘আমরা আশা করব, প্রভাবশালী অভিযুক্তদের পদ মুখ্যসচিবকে প্রভাবিত করবে না। একজন মুখ্যসচিব স্বাধীন ও গঠনতান্ত্রিক ভাবেই তার সিদ্ধান্ত নেবেন।’ বিচারপতি এদিন এও জানান, মুখ্যসচিবকে শেষ দিনেও বলেছিলাম। আপনাদের এমনিই কোন অধিকার নেই অনুমতি দেওয়ার। আমরা সম্মান করেছিলাম মুখ্যসচিবকে। হয়তো তাঁকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যেটা রাজনৈতিক ভাবে তাঁকে অপ্রিয় করে তোলে। কিন্তু তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করবেন এটাই আশা করা হয়, মন্তব্য বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির।