ইডির বকলমে কলকাতা টিভি-কে টার্গেট করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনটাই শুক্রবার আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে জানালেন কৌস্তুভ রায়ের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। একইসঙ্গে কৌস্তুভের আইনজীবী এদিন এও বলেন, ইডির উদ্দেশ্যই হল কলকাতা টিভির সম্পাদককে যেন তেন প্রকারে আটকে রাখা। এদিন কৌস্তুভের আইনজীবী এদিন এও বলেন, ইডি রোজ তার বয়ান বদল করছে। তারা কখনও বলছে, পিনকন সংস্থার থেকে কলকাতা টিভি বিজ্ঞাপন বাবদ টাকা নিয়েছে। আবার কখনও বলছে, তারা টাকাটা এমনিই নিয়েছে। এই প্রসঙ্গে আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্তের বক্তব্য, ‘আমরা বিজ্ঞাপনের সিডি দেখাতে চেয়েছি বারবার। কিন্তু ইডি তা দেখতেই চাইছে না। আমরা আমাদের দিক থেকে পরিষ্কার। ওদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে আমার মক্কেলকে আটকে রাখা।’
এদিন কলকাতা টিভির সম্পাদকের আইনজীবী এও জানান, ‘ওরা বলছে, পিনকন সংস্থা নাকি ২ কোটি ৪ লক্ষ টাকা নগদে দিয়েছে। আমরা বলছি, ৭২ লক্ষ টাকা দিয়েছে। বাকি টাকার কোনও নথি ইডি দেখাতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর নাকি কৌস্তুভকে চার লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। তিনি তো তখন জেলে ছিলেন। ওইদিন তাহলে কৌস্তুভ কী করে টাকা নিলেন। পিনকন সংস্থা নাকি ৩৩ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল মোট। তার মধ্যে আমাদের দিয়েছে ৩ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন। বাকি ২৯ কোটি টাকা যারা নিয়েছে, তাদের নিয়ে ইডির কোনও মাথা ব্যথা নেই।’ একইসঙ্গে আইনজীবীর সংযোজন, ‘ইডি এর আগে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতাকে চিঠি দিয়ে আমাদের বিজ্ঞাপন দিতে বারণ করেছিল।’ এরই রেশ ধরে আইনজীবী এও বলেন, ‘আমরা নাকি টাকা ফেরত দেব না বলে মনোরঞ্জনকে হুমকি দিয়েছি। হুমকিই যদি দিই, তাহলে আর টাকা ফেরত দেব কেন। আসলে ওদের মনমতো চললে কলকাতা টিভি ঠিক আছে। আর মনমতো না চললেই গোলমাল। আমাদের চারশো কর্মচারী রয়েছে। কৌস্তুভের বাবা-মা বৃদ্ধ। তিনি আটক থাকলে সংস্থা চালানো সমস্যা হয়ে যাবে। ইডি বলছে, আমরা নাকি প্রভাবশালী। আমরা আদৌ প্রভাবশালী নই।’ তবে এদিন আদালতে ইডির আইনজীবীর দাবি করেন, এই সংস্থার সঙ্গে পিনকনের বেআইনি লেনদেন হয়েছে। কলকাতা টিভি তাদের টার্গেট নয়। আরও তদন্তের জন্য কৌস্তুভকে জেল হেফাজতে রাখা দরকার। সঞ্জয় জামিনের আবেদন জানালেও ইডি তার বিরোধিতা করে।
এদিকে শুক্রবার দশদিনের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষে শুক্রবার কলকাতা টিভির সম্পাদককে আদালতে হাজির করানো হয়। এদিনও তিনি বেশ খোশমেজাজেই ছিলেন। এদিনও আদালতে ঢোকার মুখে কৌস্তুভ বলেন, যা হচ্ছে, ‘দেখতেই তো পাচ্ছেন। খেলা হবে। ইন্ডিয়া জিতবে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই গভীর রাতে ইডি কৌস্তুভকে গ্রেফতার করে। পরের দিন আদালতে হাজির করানোর সময় তিনি জানান, ‘মিথ্যা মামলায় আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই মামলার কোনও মেরিট নেই।’ পরে কৌস্তুভকে এও বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমার শিরদাঁড়া বিক্রি নেই।’ এদিকে কৌস্তুভকে দুই দফায় ১৪দিন ইডি হেফাজতে থাকার পর আদালত তাঁকে দশদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তার মেয়াদ শেষে এদিন ফের আদালতে হাজির করা হলে আদালত ফের ১৪দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।