যোগেশচন্দ্রর ঘটনায় চারু মার্কেট থানার ওসিকে তলব আদালতের

বুধবার যোগেশ চন্দ্র কলেজ যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য চারু মার্কেট থানার ওসিকে তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাঁকে দ্রুত হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। মনে করা হচ্ছে, কলেজের ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট পেতেই এই তলব।

বৃহস্পতিবারের শুনানিতে টিএমসিপি  নেতা সাব্বির আলির আইনজীবী পার্থ সারথি বর্মণের দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। মিথ্যে অভিযোগ। বস্তুত, বুধবার যোগেশ চন্দ্র ল কলজের পড়ুয়াদের একাংশ অভিযোগ করেন, ক্য়াম্পাসের ভিতরে তাঁদের গায়ে বহিরাগতরা এসে রং-জল ছুড়েছেন। এরা সকলেই সাব্বির আলির ‘ঘনিষ্ঠ’। এরপর এই মামলা ওঠে কোর্টে।

এ দিন আদালতে শুনানি চলার সময় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সাব্বিরের উদ্দেশে বলেন, ‘ধরে নিচ্ছি আপনি ছিলেন না। আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ। আপনি যদি লিডার হন ইউনিয়নের, তাহলে আপনার উপর দায়িত্ব পড়ে। ক্লাসরুমে যা হয়েছে সেই ছাত্র যদি আপনার ইউনিয়নের হয়, আপনি তো ঘটনা অস্বীকার করতে পারেন না। একজন ছাত্র যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন আপনি দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।’

পাল্টা মামলাকারী ছাত্রের আইনজীবী অর্ক নাগ জানান, ‘এই নিয়ে তৃতীয়বার আদালতে এল যোগেশ চন্দ্র কলেজ। বহিরাগতরা রং বলে যেটা ব্যবহার করল সেটা লঙ্কার গুঁড়ো,হলুদ, ধনের গুঁড়ো। মিডিয়াকে মারধর করা হয়েছে। একটাও এফআইআর হয়নি। অথচ পুলিশ ছিল ঘটনাস্থলে।’

এরপরই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানতে চান, বহিরাগতরা কী চায় সে ব্যাপারেও। এরপর আইনজীবী অর্ক নাগ বলেন, ‘সরস্বতী পুজো থেকে শুরু। আদালত দুটি পুজোর অনুমতি দেয়। এরপর ডে কলেজের ছেলেরা রোজ ঝামেলা করে। পাশ করে যাওয়া ছেলেরা ওখানে সিন্ডিকেট করছে। এটা সাব্বিরের গ্রুপ।’

আইনজীবী অর্ক নাগের বক্তব্য শোনার পরই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর প্রশ্ন, ‘এগারো বছর ধরে এরা রয়েছে কলেজে। এরা তো এখন বহিরাগত।’ মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, ‘এদের মাফিয়া লিঙ্ক আছে। এই ভিডিয়ো দেখলে বোঝা যাবে এদের কী রুচি।’ এরপরই এক ছাত্রের ভিডিয়ো চালানো হয় আদালতে।

এদিনের এই শুনানিতে যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের আইনজীবী বলেন,  ‘আমরা প্রাইভেট সিকিউরিটি বসিয়েছি। চারু মার্কেট পুলিশ থানায় বার বার চিঠি লিখেছেন প্রিন্সিপালকে। কোনও লাভ হয়নি। এই ভিডিয়ো গভর্নিং বডিকে দেখানো হয়েছে। কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’ যোগেশচন্দ্র ল কলেজের আইনজীবী বলেন, ’আমাদের বিল্ডিং রেনোভেট হচ্ছে বলে অন্যত্র ক্লাস করতে হচ্ছে। নোটিস দিতে চাই বেলা ১১টার পর কোন ল কলেজের ছাত্ররা যেন কলেজের মধ্যে থাকে।’

এরপর যোগেশ চন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় বলেন, ‘মহামান্য আদালতের উপর পূর্ণ আস্থা আছে। আর বহিরাগতরা এতদিন ধরে কীভাবে থাকে সেটা বলবে প্রশাসন। আমি থানায় বহুবার বলেছি। আর যেখানে ক্ষমতার আস্ফালন থাকে সেখানে আমাদের কিছু করার থাকে না।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − one =